প্রকৌশলীদের জন্য পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ

পেশাজীবী ও চাকরিপ্রার্থীদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেছে। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রিকায় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ছাপিয়েছে। ভর্তির প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে,যা আগামী ২৩ জুন পর্যন্ত চলবে। সফলভাবে প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীদের আইডিইবি সনদপত্র দেয়।
দক্ষ জনবল তৈরির লক্ষ্যে আইডিইবি ১৯৭০ সাল থেকে নানা ধরনের গবেষণামূলক, জনকল্যাণমুখী ও পেশাগত প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।প্রতিষ্ঠানটিতে তিন মাস পরপর বছরে মোট চারবার প্রশিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হয়।
প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহ: আইডিইবির শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. ইদরিস আলী এ প্রসঙ্গে জানান, বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠান ৩০টির বেশি বিষয়ে কোর্স পরিচালনা করছে। প্রতিটি কোর্সে ৪০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। উল্লেখযোগ্য প্রশিক্ষণ কোর্সগুলোর মধ্যে রয়েছে: অটোক্যাড, কম্পিউটারনির্ভর অফিস ব্যবস্থাপনা, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার মেইনটেন্যান্স, স্পোকেন অ্যান্ড রিটেন ইংলিশ, টালি (অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার), পলিটেকনিক্যাল ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষক ব্যবস্থাপনা, তড়িৎ-যন্ত্রকৌশল, নির্মাণ ব্যবস্থাপনা, আধুনিক অফিস ব্যবস্থাপনা (ইন্টারনেট ও ই-মেইল), ভূমিকম্প ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ দক্ষতা, সরকারি ক্রয়নীতি-২০০৬ ও বিধান-২০০৮ এবং ই-টেন্ডারিং, গুণগতমান ব্যবস্থাপনা, বায়ো-মেডিকেল প্রকৌশল ইত্যাদি।
প্রশিক্ষণের বিষয় ভেদে এসএসসি বা সমমান পাস থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ও সরকারি-বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তারা আইডিইবিতে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। এখানে কোনো ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয় না। আগে এলে আগে ভর্তি—এ পদ্ধতিতেই প্রশিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়।
প্রশিক্ষক হিসেবে যাঁরা থাকেন: মো. ইদরিস আলী জানান, রাজধানীর চারপাশে বেড়িবাঁধ নির্মাণের নকশার রূপকার হলো আইডিইবি। ১৯৮৭ সালে আইডিইবির তৎকালীন সভাপতি শফিউদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মীর ও সাইদুর রহমান মিলে এই নকশা তৈরি করেছিলেন। তাঁদের মতো দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকেরাই এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। প্রশিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশকল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের (বিআইএম) শিক্ষক, লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (পিএটিসি) ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবেরা।
সুযোগ-সুবিধা: আইডিইবি পরিচালিত প্রশিক্ষণ কোর্সগুলো সাধারণত সর্বনিম্ন তিন দিন থেকে সর্বোচ্চ তিন মাস মেয়াদি হয়ে থাকে। এর মধ্যে তিন মাস মেয়াদি পাঁচটি কোর্সে সপ্তাহে তিন দিন এবং অন্যান্য কোর্সে নিয়মিত ক্লাস হয়। এখানে বিষয় বা কোর্স অনুযায়ী একজন প্রশিক্ষণার্থীর দুই হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হবে। পেশাজীবীদের সুবিধার্থে অধিকাংশ কোর্সই সন্ধ্যাকালীন হয়। প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার আনুষঙ্গিক সব ধরনের উপকরণ দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রার্থীদের প্রয়োজনসাপেক্ষে বিনা খরচেও থাকা-খাওয়ার সুবিধা দেয় আইডিইবি।
দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে এবং প্রায় ৩০টির মতো জেলায় আইডিইবির কোর্সগুলো করার সুযোগ আছে। জেলা পর্যায়ে ইলেকট্রিশিয়ানসহ নিম্ন আয়ের শ্রমজীবীদের মধ্যে যাঁদের সরাসরি কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলেও তাত্ত্বিক জ্ঞানের অভাব রয়েছে, তাঁদেরই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ ধরনের শ্রমজীবীদের তাত্ত্বিক জ্ঞান বাড়াতে বিনা খরচে প্রশিক্ষণ দেয় আইডিইবি। এর পাশাপাশি প্রশিক্ষণকালীন ভাতাও দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রতিটি জেলা ও বিভিন্ন উপজেলায় নিজস্ব ভবনে প্রযুক্তি পরামর্শকেন্দ্র রয়েছে আইডিইবির। যেখান থেকে সব ধরনের মানুষ তাঁদের বাড়ি নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ ইত্যাদি বিষয়ে বিনা খরচে পরামর্শ নিতে পারেন।
প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব: এ প্রসঙ্গে ঢাকা পলিটেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও আইডিইবির প্রশিক্ষণ সেলের পরিচালক রফিকুল ইসলাম মীর জানান, পেশাজীবীদের কাজের জায়গায় দক্ষতা বাড়াতে এ ধরনের প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া চাকরিজীবী বা শিক্ষার্থীদের সময়োপযোগী নতুন নতুন বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হতে এবং কৌশল শিখতে হলে এসব পেশাগত প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এ ধরনের পেশাগত প্রশিক্ষণ থাকলে কাজের প্রতি আত্মবিশ্বাস, কর্মক্ষেত্রে মূল্যায়ন ও সহজেই পদোন্নতি পাওয়া যায়। আবার চাকরিপ্রার্থীদের জন্যও তা সহায়ক হয়। এ বিষয়ে মো. ইদরিস আলী জানান, আইডিইবি প্রকৌশলীদের পাশাপাশি অন্যান্য খাতের পেশাজীবী বা সাধারণ মানুষের জন্যও কিছু প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে।যেমন—ভূমিকম্প ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা। যে কেউই এ প্রশিক্ষণ নিয়ে ভূমিকম্প ও দুর্যোগ প্রতিরক্ষামূলক পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন, যা নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় বলে বিবেচিত। এমন আরও অনেক কোর্স রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
আরও জানতে যোগাযোগ করুন: ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ। ১৬০/এ কাকরাইল ভিআইপি রোড, ঢাকা। ফোন: ৯৩৩৬৬৬৬।
দেখতে পারেন: www.ideb.org.bd

সূত্র: প্রথম আলো|তারিখ: ০৪-০৪-২০১২|লেখক : জাহিদ হাসান

1 thought on “প্রকৌশলীদের জন্য পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ”

  1. স্যার, অনলাইনে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কোর্স করা যাবে

Comments are closed.

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top