প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ : গুরুত্ব, কৌশল ও পদ্ধতি

প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ : গুরুত্ব, কৌশল ও পদ্ধতি

কার্যকর যোগাযোগ হলো সফল প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিমূল। অন্য কথায়, কার্যকর যোগাযোগ একটি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের রক্ত হিসাবে কাজ করে। এই নিবন্ধে আমরা জানবো প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের গুরুত্ব, কৌশল ও যোগাযোগ মাধ্যম এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত।

প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের গুরুত্ব

একটি প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগের গুরুত্ব নিম্নরূপ-
১. কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ কর্মচারীদের যে কাজটি করতে হবে, তারা যেভাবে কাজটি সম্পাদন করছে ও কীভাবে তাদের কর্মক্ষমতা উন্নত করা যায় সে সম্পর্কে অবহিত করে।

২. যোগাযোগ হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার জন্য সংগঠনের সদস্যদের কাছে তথ্যের একটি উৎস। কারণ এটি কাজের বিকল্প পথ চিহ্নিত ও মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে।

৩. যোগাযোগ ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ, সার্বিক বিষয়ে অবগত একজন ব্যক্তি কম-জ্ঞাত ব্যক্তির চেয়ে ভালো দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। সাংগঠনিক পত্রিকা, জার্নাল, মিটিং এবং অন্যান্য মৌখিক ও লিখিত যোগাযোগের বিভিন্ন রূপ কর্মকতা-কর্মচারীর সঠিক দৃষ্টিভংঙ্গি তৈরি করতে সাহায্য করে।

৪. যোগাযোগ সামাজিকীকরণেও সাহায্য করে। যোগাযোগ ছাড়া কেউ বাঁচতে পারে না।

৫. যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায়ও সাহায্য করে। এটি বিভিন্ন উপায়ে সাংগঠনিক সদস্যদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের দিক

সাংগঠনিক যোগাযোগ ঊর্ধ্বমুখী (upward), নিম্নগামী (downward) এবং অনুভূমিকভাবে (Horizontally) সঞ্চালিত হয়।

ক. নিম্নগামী যোগাযোগ ব্যবস্থাপক এবং নির্বাহী স্তর থেকে কর্মীদের মধ্যে প্রবাহিত হয় আনুষ্ঠানিক চ্যানেল যেমন নীতিমালা, নিয়ম ও প্রবিধান এবং সাংগঠনিক চার্টের মাধ্যমে।

খ. ঊর্ধ্বমুখী যোগাযোগ কর্মীদের দ্বারা শুরু হয় এবং নির্বাহীদের দিকে সঞ্চালিত হয়। এটি প্রায়শই একটি অভিযোগ বা অনুরোধের আকারে হয়ে থাকে।

গ. অনুভূমিক যোগাযোগ (Horizontal) ঘটে যখন সহকর্মীরা সাধারণ আগ্রহের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করতে, সমস্যার সমাধান করতে এবং তথ্য ভাগ করার জন্য মিলিত হন।

সফল প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ কৌশল তৈরির ৯টি ধাপ

১. আপনার ব্যবসায়িক কৌশলের (Business Strategy) সাথে আপনার সাংগঠনিক যোগাযোগ পরিকল্পনা সংযুক্ত করুন
– কাদের সাথে কোন প্রক্রিয়ায় যোগাযোযোগ হবে তা নিশ্চিত করুন
– কে কার সাথে যোগাযোগ করবে সেটি স্পষ্ট রাখুন

২. যোগাযোগের জন্য অডিয়েন্স সুনির্দিষ্ট করুন
– বিভাগ, লোকেশন বা পদ অনুযায়ী যথাযথ অডিয়েন্স নির্ধারণ করুন
– সবাইকে একই তথ্য শেয়ার করবেন না।
কেন?
এতে অনেকের কাছে আপনার কনটেন্স অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে। ফলে পরবর্তীতে পাঠানো নির্দেশনামূলক কন্টেন্ট তাদের কাছে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলবে।

৩. সব কর্মকর্তা-কর্মচারিকে যোগাযোগের মধ্যে রাখুন

৪. আকর্ষণীয় ও প্রাসঙ্গিক কনটেন্ট তৈরি করুন
– দুর্ভাগ্যবশত, অনেক এমপ্লয়ি তাদের প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ কন্টেন্টগুলো নিয়মিত পড়েন না। অধিকন্তু, অনেক কর্মচারী কোম্পানির ইন্টারনেট বা ইমেলের মাধ্যমে তাদের কাছে পাঠানো বার্তাগুলিকে উপেক্ষা করে।
কেন এমন ঘটে?
এটি বেশিরভাগই ঘটে কারণ তাদের কাছে পাঠানো বিষয়বস্তু তারা যা করে তার সাথে প্রাসঙ্গিক নয়। সমস্ত কর্মচারীদের একটি গণ নিউজলেটার পাঠানো এবং এটা আশা করা যে, তারা এটি পড়বেন- আজকের যুগে তা মোটেও বাস্তবসম্মত নয়।

৫. সঠিক চ্যানেলের মাধ্যমে আপনার তথ্য বিতরণ করুন

৬. সঠিক যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রয়োগ করুন

৭. ফলাফল পরিমাপ করুন
নিচের ডেটা সংগ্রহ করা আপনাকে প্রশ্নের উত্তর দিতে সাহায্য করতে পারে। যেমন-
• আপনার অভ্যন্তরীণ কন্টেন্টের সাথে আপনার কর্মীরা কতটা জড়িত?
• তারা কিভাবে আপনার বার্তা প্রতিক্রিয়া?
• তথ্য প্রদানের জন্য কোন যোগাযোগের মাধ্যমগুলো সবচেয়ে ভালো?
• কোন ধরনের বিষয়বস্তু সাথে কর্মীরা সবচেয়ে বেশি জড়িত?
• কোন কর্মচারীরা সবচেয়ে বেশি (লাইক, শেয়ার, মন্তব্য) জড়িত?

৮. আপনার সাংগঠনিক যোগাযোগ কৌশল উন্নত করতে আপনার ডেটা ব্যবহার করুন

৯. আপনার কর্মস্থলের পরিবর্তন নিজেই দেখুন

প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ মাধ্যম

যোগাযোগের মাধ্যম হলো একটি সিস্টেম বা চ্যানেল, যার মাধ্যমে একজন বক্তা বা লেখক তাদের পাঠক ও শ্রোতাদের সাথে যোগাযোগ করেন। এটা লিখিত, মৌখিক বা অমৌখিক হতে পারে।
যোগাযোগ মাধ্যম ভার্চুয়াল কিংবা ফিজিক্যাল হতে পারে।

প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রকারভেদ

১. মুখোমুখি যোগাযোগ

কর্মক্ষেত্রে যোগাযোগের সবচেয়ে সাধারণ ধরনের একটি হলো মুখোমুখি যোগাযোগ। এর মধ্যে দুই বা ততোধিক লোকের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ জড়িত। এটি সাধারণত একে অপরের সাথে কথোপকথন। তবে সমবসময় এতে কথোপকথন না-ও থাকতে পারে। যেমন- একটি সম্মেলনে একজন বক্তার শ্রোতাদের কাছে কোনো কিছু উপস্থাপন করা।
এ ধরনের যোগাযোগ হয় তাৎক্ষণিক।

২. দূরবর্তী ভার্চুয়াল যোগাযোগ বা রিমোট কমিউনিকেশন

রিমোট কমিউনিকেশনে সাধারণত প্রযুক্তির ব্যবহার জড়িত থাকে। যাতে অন্য কোনো স্থানে কাজ করা কাউকে বার্তা পাঠানো হয়। লিখিত, মৌখিক এবং ভিজ্যুয়াল যোগাযোগ হতে পারে এক্ষেত্রে। যেমন- ইমেইল, ফোন কল, মেসেজ, ভিডিও কল ইত্যাদি।

৩. লিখিত যোগাযোগ

যদিও তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে লিখিত যোগাযোগ অনেকটাই কমে গেছে। তবুও কর্মক্ষেত্রে এটা এখনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
যোগাযোগের এই ফর্মটিতে লিখিত নোট, চিঠি এবং মেমো জড়িত। লিখিত যোগাযোগ তার প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, সহকর্মীর কাছে রিমাইন্ডার হিসাবে একটি হাতে লেখা নোট রেখে যাওয়া যোগাযোগের একটি অনানুষ্ঠানিক উপায় হতে পারে। আনুষ্ঠানিক লিখিত চিঠিপত্রের একটি উদাহরণ হতে পারে একটি হস্তলিখিত কার্ড; যা একজন সহকর্মীকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানাতে লেখা হয়েছে।

৪. সোশ্যাল মিডিয়া যোগাযোগ

কর্মক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া যোগাযোগ অভ্যন্তরীণ কর্মচারীদের পরিবর্তে বহিরাগত ভোক্তাদের কাছে বার্তা প্রচার করতে বেশি ব্যবহৃত হয়। অনেক কোম্পানি বা সংস্থা বিজ্ঞাপন ও প্রচারের মাধ্যমে তাদের টার্গেটকৃত ভোক্তাদের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন।

সোশ্যাল মিডিয়া গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে। কারণ এটি বিভিন্ন যোগাযোগের মাধ্যমকে একত্রিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু প্ল্যাটফর্ম ছবির মতো ভিজ্যুয়াল সামগ্রী সমর্থন করে, আবার কেউ কেউ ভিডিও যোগাযোগ সাপোর্ট করে। এছাড়া বেশিরভাগ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত বা গ্রুপ চ্যাটে যোগাযোগ করার অনুমতি দেয়, যা দুই বা ততোধিক অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যোগাযোগে সহায়তা করে।

কিছু কোম্পানি বা টিম অভ্যন্তরীণ উদ্দেশ্যে সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সহকর্মীদের দ্রুত বার্তা পাঠাতে আপনার টিম একটি তাত্ক্ষণিক বার্তাপ্রেরণ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারে।

অন্যরা সম্ভাব্য ব্যবসায়িক অংশীদারদের সাথে পৌঁছতে সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়া মেসেজিং সাধারণত অন্যান্য ধরনের মেসেজিং এর তুলনায় কম আনুষ্ঠানিক হয়, এটি দর্শকদের সাথে যোগাযোগ করার একটি সুবিধাজনক উপায় হতে পারে।

৫. অমৌখিক যোগাযোগ

কখনো কখনো লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগের বাইরে অমৌখিক যোগাযোগও ব্যবহার করা হতে পারে।স্বর বা অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে এ ধরনের যোগাযোগ হতে পারে। যেহেতু অমৌখিক ইঙ্গিতগুলি অঙ্গভঙ্গি এবং অভিব্যক্তির উপর নির্ভর করে, যেমন হাসি, তাই কিছু মাধ্যমে প্রকাশ করা কঠিন হতে পারে।

কর্পোরেট কমিউনিকেশন বনাম নন-প্রফিট কমিউনিকেশন

কমিউনিকেশন হলো একটি প্রতিষ্ঠানের অডিয়েন্সের সাথে যে কোনো ধরনের যোগাযোগ। সমস্ত বাহ্যিক যোগাযোগের লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের মিশন এবং এর কাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বহির্বিশ্বকে অবহিত করা।
সেজন্য প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য উদ্দেশ্য অনুযায়ী তাদের যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা রয়েছে।
কর্পোরেট কমিউনিকেশন এবং নন-প্রফিট কমিউনিকেশনের মধ্যে কিছু বিষয়ে পার্থক্য রয়েছে।

  •  Making a Difference vs. Making a Profit
    অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলি মুনাফার বাইরে একটি কারণ দ্বারা চালিত হয়, যেখানে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলি মুনাফাকেন্দ্রিক পরিচালিত।
  • Types of Stakeholders
    স্টেকহোল্ডাররা হলো একটি সংস্থার সাথে সংযুক্ত এবং প্রভাবিত গোষ্ঠী। তারা না থাকলে সংগঠনটি শেষ হয়ে যাবে। অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে, এই গোষ্ঠীটি কর্মচারী, দাতা, স্বেচ্ছাসেবক এবং প্রোগ্রামের সুবিধাভোগীদের নিয়ে গঠিত।
    কর্পোরেশন বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানও কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে। তবে ভোক্তা, নির্বাহী ও বিনিয়োগকারীদের সাথেও তাদের যোগাযোগ করতে হয়। বিভিন্ন ধরনের স্টেকহোল্ডার মানে বিভিন্ন যোগাযোগ কৌশল।
  • Sources of Revenue
    একটি অলাভজনক সংস্থা তহবিলের জন্য দান ও অনুদানের ওপর নির্ভর করে। কর্পোরেশনগুলি ভোক্তাদের ক্রয় এবং বিক্রয় পরিসংখ্যানের উপর নির্ভর করে। এই পার্থক্যের পরিপ্রেক্ষিতে, অলাভজনক প্রতিষ্টানের সাধারণত তাদের যোগাযোগে সীমিত বাজেট থাকে।
  • The Power of Storytelling
    স্টোরি টেলিং বা গল্প বলা সব ক্ষেত্রেই যোগাযোগ পেশাদারদের মধ্যে একটি আকর্ষণীয় শব্দ। তবে এটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তারা চায় মানুষের মাঝে তাদের কর্মকাণ্ডের একটি মানবিক আবেদন তৈরি করতে। এতে করে তাদের ফান্ড রাইজিং-এ বিশেষ সুবিধা হয়।
    অন্যদিকে, কর্পোরেশনগুলি পণ্য বা সেবা বিক্রির উদ্দেশে যোগাযোগ করে। তারা তাদের যোগাযোগে শুধুমাত্র মানসিক আবেদনের উপর নির্ভর করে না।

অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগের ধরন

১. স্টোরি টেলিং : স্টোরি টেলিং বা গল্প বলা হলো একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। প্রকৃতপক্ষে, প্রাসঙ্গিক পরিসংখ্যানের বিপরীতে একটি আকর্ষক গল্প উপস্থাপন করা হলে দাতাদের অনুদান দেওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়ে যায়।

২. মার্কেটিং: বিপণন অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগের এমন কৌশল; যার উদ্দেশ্য সংস্থার লক্ষ্যকে এগিয়ে নিতে টার্গেট অডিয়েন্সকে পদক্ষেপ নিতে অনুপ্রাণিত করা।
– Promote Your Upcoming Event
– Recruit Volunteers for Your Current Project
– Ask for Donations

৩. ফান্ডরাইজিং বা তহবিল সংগ্রহ
তহবিল সংগ্রহ একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। সর্বোপরি, এর মাধ্যমে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান তার মিশন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। সফলভাবে অর্থ সংগ্রহ করার জন্য, অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগের প্রয়োজন হয়।
তহবিল সংগ্রহের যোগাযোগ জটিল প্রক্রিয়া। কারণ এর জন্য বিভিন্ন অডিয়েন্সের সাথে যোগাযোগের প্রয়োজন হয়। এই ধরনের যোগাযোগের মাধ্যমে আপনি অন্তত তিনটি প্রধান গোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ করবেন।
– বর্তমান দাতা
– সম্ভাব্য দাতা
– ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান
সফল ক্যাম্পেইনই শেষ কথা নয়। এরপরও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যেতে হয়।

৪. এনগেজমেন্ট (Engagement)
এই ধরনের যোগাযোগ আপনার অডিয়েন্সের সাথে কথোপকথন শুরু করার উপর ফোকাস করে। আপনি মিথস্ক্রিয়া বা interaction বাড়ানোর জন্য আপনার প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে পোল ফিচার ব্যবহার করতে পারেন বা ফলোয়ারদেরকে শেয়ার করার জন্য Facebook-এ একটি ইভেন্ট পোস্ট করতে পারেন।
এছাড়া টুইটার, ফেসবুক ও ইউটিউবে ভিডিও শেয়ার করে এনগেজমেন্ট বাড়াতে পারেন।
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে, কারো কাছে সরাসরি টাকা চাওয়ার আগে তাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়। পরবর্তী সময়ে এসব লোককে আপনার সম্ভাব্য দাতা বা স্টেক হোল্ডার করে নিতে পারবেন ।

৫. কিউরেশন
কিউরেশন হচ্ছে আপনার সংস্থার উপকারভোগীদের কাছ থেকে তথ্য ও অভিমত সংগ্রহ করে তা অডিয়েন্সের কাছে তুলে ধরা। এটা আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্রান্ডিংয়ের জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এছাড়া প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন সোর্স থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা নিজস্ব চ্যানেলে সরবরাহ করা।

অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ পরিকল্পনা

অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের জন্য যোগাযোগ একটি বহুমুখী জটিল কাজ। আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে এবং আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে ভালো ফলাফলের জন্য, একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

১. সুস্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

২. প্রাতিষ্ঠানিক ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করুন
– প্রতিষ্ঠানের সব ডকুমেন্টে নাম, স্লোগান, লোগো ও ওয়েবসাইটের ঠিকানা ব্যবহার করুন
– যেকোনো ইমেইল প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল থেকে পাঠান। আপনার ইমেইল অ্যাড্রেস হবে আপনার ওয়েবসাইটের নামে। জিমেইল বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে না। যেমন : আমার প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট www.gtfcbd.com
সেক্ষেত্রে আমার ইমেইল হওয়া উচিত [email protected]

৩. তথ্য উপাত্ত দেখুন
– অন্ধভাবে গতানুগতিক যোগাযোগ পদ্ধতি অনুসরণ করবেন না। ডিজিটাল এই সময়ে সব তথ্য উপাত্ত হাতের নাগালেই আছে। তাই তা বিশ্লেষণ করুন।
– আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কারা? তাদের কাছে পৌঁছতে কোন ধরনের যোগাযোগ চ্যানেল ব্যবহার করবেন?
– আপনার আগের ক্যাম্পেইনগুলোর ফলাফল কেমন ইত্যাদি পর্যালোচনা করুন।

৪. টার্গেট অডিয়েন্স
– আপনার প্রতিষ্ঠানের টার্গেট অডিয়েন্স কারা?
– একাধিক টার্গেট গ্রুপ থাকলে আলাদা মার্কেটিং প্লান রাখতে হবে।
– লক্ষ্য ও অডিয়েন্স অনুযায়ী আলাদা ক্যাম্পেইন করুন

৫. যোগাযোগ চ্যানেল ঠিক করুন
– যোগাযোগের জন্য সভা-সেমিনার, ইমেইল, স্যোশাল মিডিয়া, সরাসরি চিঠি প্রদান, বুলেটিন, ম্যাগাজিন, ওয়েবসাইট ইত্যাদি বিভিন্ন চ্যানেল থাকতে পারে। এগুলো থেকে কোনটি আপনার অডিয়েন্সের জন্য বেশি উপযুক্ত তা নির্ধারণ করুন।

৬. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করুন
আপনার প্রতিষ্ঠানের অন্তত নিম্নোক্ত স্যোশাল মিডিয়াগুলোতে অ্যাকাউন্ট থাকা দরকার।
– ফেসবুক
ইউটিউব
– টুইটার
– লিংকডিন
– ইনস্টাগ্রাম
গুগল বিজনেস

৭. গল্প বলুন
– আপনার প্রতিষ্ঠানের গল্পগুলো শেয়ার করুন
– প্রতিষ্ঠানের উপকারভোগীদের সাক্ষাৎকার তুলে ধরুন। তাদের জীবন-মান বদলের কাহিনী প্রচার করুন।
– প্রতিষ্ঠানের অর্জনগুলো শেয়ার করুন
– সংস্থা সম্পর্কে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মূল্যায়ন তুলে ধরুন
– টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে আপনাদের আপিল তুলে ধরুন

৮. আলাপ-আলোচনায় নেতৃত্ব দিন
– আপনি যে বিষয় নিয়ে কাজ করছেন, সে সংক্রান্ত সভা-সেমিনারে অংশ নিন। সেখানে কথা বলার সুযোগ গ্রহণ করুন।
– টক-শোতে অংশ নিন
– পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিন, কলাম লিখুন
– রাজনৈতিক নেতাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে আপনার প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও কার্যক্রম তুলে ধরুন। তা বাস্তবায়নে সহযোগিতা কামনা করুন।
– সমমনা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলোর প্রচার কার্যক্রমের ওপর নজর রাখুন। তাদের ভালো দিকগুলো গ্রহণ করুন।

প্রতিষ্ঠানিক যোগাযোগ ও ওয়েবসাইট

বর্তমান সময়ে যেকোনো প্রতিষ্ঠানের অবশ্যই একটি ওয়েবসাইট থাকা উচিৎ। কারণ-

    • ওয়েবসাইট আপনার প্রতিষ্ঠানের ২৪/৭ প্রচার করে
    • বিশ্বের সব দেশে থেকেই যেহেতু এটা দেখা যায়, তাই আপনার প্রতিষ্ঠানকে বিশ্ব পর্যায়ে নিয়ে যায়
    • আপনি যখন ঘুমান, তখন এটা আপনার প্রক্সি দেয়। যে কেউ চাইলেই আপনার প্রতিষ্ঠান ও কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারে।
    • আপনার সাথে যে কেউ যোগাযোগ করতে পারে।
    • আপনার প্রতিষ্ঠানের কাজের ব্যাপারে ফিডব্যাক দিতে পারে।
    • আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়।
    • সর্বোপরি অর্থ বা তহবিল সংগ্রহে সাহায্য করে।

আরো পড়ুন : ডোমেইন হোস্টিং ওয়েবসাইট : যা অবশ্যই জানা দরকার


ফেসবুক পেইজ পরিচালনা

  • নিয়মিত আপডেট করুন
  • ছবি-ভিডিও বেশি পোস্ট করুন
  • মাঝে মাঝে লাইভ করুন
  • পাঠকদের বিভিন্ন প্রশ্ন করুন
  • পোল পরিচালনা করুন

আরো পড়ুন : ফেসবুক পেইজে রিচ বাড়ানোর ১২টি অব্যর্থ কৌশল

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top