সাক্ষাৎকারে এড়িয়ে চলুন কয়েকটি মারাত্মক ভুল

0
106

মো: বাকীবিল্লাহ

বর্তমান চাকরির বাজারে চাকরি পাওয়া যেন সোনার হরিণ। চাকরির জন্য ছুটতে ছুটতে আপনি হয়তো ক্লান্ত। জীবনে অনেক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, অনেক সময় ভেবেছেন এবার চাকরিটা হয়েই যাবে। কিন্তু ডাক আসেনি। মনে ভর করেছে হতাশা। কিন্তু আসলে সমস্যাটা কী?

১. ব্যক্তিত্ব ও চিন্তাশীলতার প্রমাণ না দেয়া
সাক্ষাৎকারের সময় প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর হতে হবে যথাযথ ও সমৃদ্ধ। ভাসা ভাসা জ্ঞান দিয়ে অনুমান নির্ভর উত্তর না দেয়াই ভালো। কারণ,  চাকরিদাতারা রোবটের মতো উত্তর চান না। সুতরাং উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে আপনার ব্যক্তিত্ব, সততা ও চিন্তাশীলতার প্রমাণ দিন।

২. ‘না-বোধক’ উত্তর দেয়া
আপনি কি কাজটি করতে পারবেন? আপনি কি চাকরিটি চান? আপনি কি এ কাজের যোগ্য? প্রশ্ন তিনটি একজন চাকরিদাতার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তাই এ প্রশ্নগুলোর উত্তরে ‘না’ শব্দ ব্যবহারের মতো ভুল করা থেকে বিরত থাকুন।

৩. জব সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকা
ইন্টারভিউ বোর্ডে যাওয়ার আগে আপনি যে পদের জন্য সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন সে পদে আপনার ভূমিকা ও কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস, অর্জন, মূল্যবোধ, পণ্য বা সেবা, গ্রাহক ইত্যাদি সম্পর্কে জানুন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সেক্টরের সমস্যা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে গবেষণা করুন। সেজন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগ, প্রকাশনা, ওয়েবসাইট ও ফেসবুক-টুইটারের সাহায্য নিন।

৪. আপনার দক্ষতা সম্পর্কে না জানানো
ভাইভা বোর্ডে নির্দিষ্ট কোনো অভিজ্ঞতার কথা বলার চেয়ে কীভাবে আপনার দক্ষতার ব্যবহার করেছেন কিংবা ফল অর্জন করেছেন তা কৌশলে বলে দেয়ার চেষ্টা করুন।
চাকরির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিছু উদাহরণ আপনার জীবন থেকে বাছাই করুন। এর আগেই উদাহরণগুলো আপনার সিভিতে সংক্ষেপে উল্লেখ করবেন। সাক্ষাৎকারে তা ব্যাখ্যা করুন। তবে উদাহরণগুলো যেন প্রাসঙ্গিক হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকুন। কেননা অপ্রাসঙ্গিক উদাহরণ আপনার ব্যক্তিত্বকে খাটো করবে। আর সবার জন্য বিরক্তির কারণ হবে।

৫. কেন চাকরিটি চান তা না জানা
প্রবল উৎসাহ ও আগ্রহের অভাবে আপনি হারিয়ে ফেলতে পারেন প্রত্যাশিত চাকরিটি। আপনাকে অবশ্যই বলতে হবে কোম্পানির চাওয়া ও আপনার ভূমিকা সম্পর্কে। চাকরিদাতাকে আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে জানাতে ‘আপনার সম্পর্কে কিছু বলুন’-এই প্রশ্নটিকে কাজে লাগান। আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও চিন্তার ব্যাপারে প্রশ্নের জন্য প্রস্তুতি নিন। সুন্দর, গোছালো ও চিন্তাশীলতার সাথে প্রশ্নটির উত্তর দিন। উচ্চাভিলাসী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করুন। তবে অতিমাত্রায় নয়।

৬. নেতিবাচক শারীরিক ভাষা
সাক্ষাৎকারের সময় নেতিবাচক শারীরিক ভাষার কারণেও আপনার সাধের চাকরিটি হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে। সেজন্য আপনার ওঠা, বসা, প্রশ্নের উত্তর দেয়া সব ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী হোন।

৭. অপেশাদার মন্তব্য
কারো ব্যাপারে অভিযোগকারী কোনো সহকর্মীর সাথে সাধারণত কেউ কাজ করতে চায় না। সেজন্য আগের অফিসের ব্যবস্থাপক বা সহকর্মী সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করবেন না। বরং সবার সাথে মিলে মিশে কাজ করতে পারবেন সেটাই প্রমাণ করার চেষ্টা করুন।

৮. ফলোআপ না করা
সাক্ষাৎকারের পর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে চাকরিদাতাকে চিঠি পাঠানো নিজেকে উপস্থাপনের কার্যকর পন্থা হতে পারে। প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে যদি প্রতিষ্ঠান কোনো সিদ্ধান্ত না জানায়, তবে ফলোআপ চিঠি আপনার দৃঢ়তা ও এগিয়ে থাকার সক্ষমতা প্রমাণ করবে।

ঘোষণা

আপনিও লিখুন


প্রিয় পাঠক, আপনিও লিখতে পারেন ক্যারিয়ার ইনটেলিজেন্সে। শিক্ষা, ক্যারিয়ার বা পেশা সম্পর্কে যে কোনো লেখা আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিন। পাঠাতে পারেন অনুবাদ লেখাও। তবে সেক্ষেত্রে মূল উৎসটি অবশ্যই উল্লেখ করুন লেখার শেষে। লেখা পাঠাতে পারেন ইমেইলে অথবা ফেসবুক ইনবক্সে। ইমেইল : [email protected]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here