পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়

পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার ১০ উপায়

পড়তে বসলে ক্লান্ত লাগছে? পড়াশোনা একেবারেই বিরক্তি লাগে? অজান্তেই হাতে উঠছে মোবাইল ফোন? ইন্টারনেটের জগতে ঘুরতে গিয়ে চলে যাচ্ছে একটা বড় সময় কিংবা মন বিচরণ করছে অজানা কোনো জগতে! এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণের কিছু সহজ উপায় আছে। পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার এমন কয়েকটি সহজ উপায় সম্পর্কে জানাচ্ছেন তামান্না-ই-জাহান

পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ার উপায়

১. লক্ষ্য স্থির করুন

সবকিছুতে একটি লক্ষ্য থাকতে হয়। উদ্দেশ্যহীনভাবে যদি আপনি বল ছোড়েন, সেই বল যেমন গোল পোস্টে ঢুকবে না, ঠিক উদ্দেশ্যহীন পড়ালেখায় মন বসবে না, এটাই স্বাভাবিক। পড়াশোনার পেছনেও তাই লক্ষ্য থাকা চাই।

আবার ধরুন, আপনি বাসা থেকে হাটতে বের হলেন, কিন্তু আপনি কেন হাঁটবেন বা হাঁটলে কী হবে তা জানেন না। তাহলে, খুব বড়জোর ২/ ৩ দিন হাটার পর আপনি আর হাঁটবেন না।

কারণ, আপনি জানেন না আপনি কেন হাঁটছেন। পড়াশোনাও ঠিক তদ্রূপ, আপনি কেন পড়ছেন পড়ালেখা করে আপনি কী হতে চান? এই লক্ষ্য আগে ঠিক করুন।

২. রুটিন তৈরি করুন

আগামীকাল কী পড়বেন, তা আগের দিন প্ল্যান করে আলাদা খাতায় লিখে রাখুন এবং পরের দিন সেই প্ল্যান অনুযায়ী পড়ুন। প্রতি সপ্তাহ ও মাসে কোন কোন সাবজেক্ট বা বই শেষ করবেন, তা-ও প্ল্যান করে খাতায় লিখে রাখুন এবং একটি দৈনিক পড়ার রুটিন করতে পারেন।

অনেকে জানতে চান রুটিন কিভাবে করব? তাদেরকে বলব, আপনার যেভাবে সুবিধা হয়, সেভাবে রুটিনকে সাজান। অবশ্যই পড়ার মাঝে অল্প সময় বিরতি দিবেন। কারণ, মানুষের ব্রেইন ৪০ মিনিটের বেশি মনোযোগ রাখতে পারে না। তাই, বিরতি দিয়ে দিয়ে পড়লে পড়াটা খুব ভালো হয়।

লেখাপড়ার রুটিন
আপনার যেভাবে সুবিধা হয়, সেভাবে রুটিনকে সাজান

৩. সহজ দিয়ে শুরু

যেকোনো পড়াশোনার সময় সহজ বিষয় দিয়ে শুরু করুন। একটা গতি চলে এলে কঠিন বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া সহজ হয়ে যাবে।

একটা বইয়ের যদি অনেকগুলো চ্যাপটার থাকে, কিংবা কোনো চ্যাপটার যদি অনেক বড় হয়; তাহলে সেগুলো ভাগ করে নিন কয়েক ভাগে। এতে পড়া কম মনে হবে এবং পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

৪. টেবিলে বসে পড়ার অভ্যাস করুন

অনেকে বিছানায় শুয়ে বা হেলান দিয়ে পড়েন, এটা বাদ দিতে হবে। এতে কিছুক্ষণ পড়ার পর ঘুমের ভাব আসে এবং পড়ার ইচ্ছে শেষ হয়ে যায়। তাই টেবিলে পড়ার অভ্যাস করতে হবে।

৫. দুশ্চিন্তা পরিহার করুন

অতীত নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করলে পড়ার প্রতি মনোযোগ কমে যায়। কেউ কেউ জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পিছিয়ে পড়েন। জীবনে পিছিয়ে পড়া নিয়ে অযথা না ভেবে, কীভাবে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়, সেটা নিয়েই ভাবুন।

ধ্যান বা মেডিটেশনের মাধ্যমে মনকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমাদের মন একসঙ্গে অনেক কিছু চিন্তা করতে থাকে। ধ্যানের মাধ্যমে একটি বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার অভ্যাস তৈরি করা যায়।

৬. নিজের ওপর আস্থা রাখুন

আপনার সামর্থ্য নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলতে পারে। ‘আপনার দ্বারা হবে না। আপনি জীবনে কিছু করতে পারবেন না।’ এ ধরনের কথা পড়াশোনার প্রতি আপনাকে ডিমোটিভেটেড করতে পারে। তাই অন্যের কথা এড়িয়ে চলুন এবং নিজের সামর্থ্যের ওপর আস্থা রাখুন।

স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে
স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে

৭. ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খান

শিক্ষার্থীদের চাই যথেষ্ট ভিটামিন, মিনারেল এবং পানীয় অর্থাৎ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

বিভিন্ন বাদাম, সামুদ্রিক মাছ, শাক-সবজি, ফল, গ্রিন-টিসহ বিভিন্ন চা খাদ্যতালিকায় রাখুন। যা শরীর এবং মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। পড়াশোনার মাঝে পাকা টমেটো বা টমেটোর জুসও খেতে পারেন।

৮. নিয়মিত ব্যায়াম করুন

নিয়মিত ও পর্যাপ্ত খেলাধুলা ও ব্যায়াম আমাদের মনমেজাজ ও মস্তিষ্ককে চাঙা রাখতে সহায়তা করে। ফলে আপনার পড়তে ভালো লাগবে।

৯. পর্যাপ্ত ঘুম

অনেকে সারা রাত জেগে ফেসবুক কিংবা ইউটিউবে ভিডিও দেখে কাটান এতে করে ঠিকমতো ঘুম হয় না। ফলে আপনার ব্রেইন শান্ত হয় না, আর এর প্রভাব পড়াশোনার ওপর পরে। ফলে, একজন মানুষের জন্য প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন।

পর্যাপ্ত ঘুম

১০. পড়ার সময় ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন

পড়ার সময় ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইউটিউব, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে সেগুলোর প্রতি মনোযোগ চলে যেতে পারে। তাই পড়ার সময় এগুলো ব্যবহার থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top