প্রশ্নোত্তরের ওয়েবসাইট কোরা ডটকম বাংলা ভার্সনে একটি প্রশ্ন করেছিলেন এইচএসসি’র একজন শিক্ষার্থী। তিনি লিখেছেন- হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়-তে BSc/MSc/PhD করতে কিভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারি? এ প্রশ্নে উত্তর দিয়েছেন বাংলাদেশের চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা, বর্তমানে হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট মাসরুফ হোসেন। তিনি যে উত্তর দিয়েছেন তা ক্যারিয়ার ইনটেলিজেন্সের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
নিচের কাজগুলো করতে হবে-
এক) গাছে কাঁঠাল থাকতে গোঁফে তেল দেয়া একদম বন্ধ। সর্বপ্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে- এইচএসসির পড়াশোনাটা খুব ভালভাবে করা। মুখস্ত করে আর নোট পড়ে গোল্ডেন জিপিএ তোলার বদলে মস্তিষ্ক খাটিয়ে চিন্তার মাধ্যমে জ্ঞান আত্মস্থ করতে হবে। উত্তর বের করলেই হবে না, সমস্যার ধরন, সমাধান কোথা থেকে কিভাবে কেন এলো -এগুলো অনুধাবন করতে হবে। গুগল ইউটিউব ব্যবহার করে পড়াশোনা খুব সহজেই করা যায়, এই তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহ অপচয় না করে জ্ঞানার্জনের কাজে লাগাতে হবে।
দুই) পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি (পাঠ্যবই বাদ দিয়ে নয়) প্রচুর পরিমাণ ইংরেজি বই পড়তে হবে। ফিকশন এবং নন ফিকশন দুই ধরনের বই-ই পাঠ্যতালিকায় থাকবে। প্রচুর বই পড়লে এক ধরণের প্রজ্ঞা জন্মায় পাঠকের ভেতর- এই প্রজ্ঞা ছাড়া হার্ভার্ডে বা বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিকে থাকা অসম্ভব (যদি না বাবা মা একই সাথে বিলিওনিয়ার এবং ক্ষমতাধর হয়- সেরকম হলে এই লেখা না পড়লেও চলবে। পোষ্য কোটায় এবং ডোনেশন কোটায় চান্স পাওয়া সম্ভব, তবে পাস করে ডিগ্রি নিয়ে বের না হবার প্রবল আশঙ্কা আছে। বাবা তো এসে পরীক্ষার খাতায় লিখে দিয়ে যেতে পারবে না!)
তিন) হার্ভার্ডের ওয়েবসাইট ঘাঁটতে হবে। বিভিন্ন বিভাগে ওদের ন্যূনতম যোগ্যতা কী – তা দেখতে হবে, সেই অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। ইউটিউবে শত শত হার্ভার্ড ছাত্রের অ্যাডমিশনের অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়, সেগুলো দেখে ধারণা করতে হবে কোন ধরনের ছেলেমেয়েরা এখানে পড়ে।
চার) ইংরেজিতে দখল থাকতে হবে, বিশেষ করে লেখায়। হার্ভার্ডের অ্যাডমিশন রচনাতে নিজের গল্পটা এমনভাবে বলতে হবে যাতে অ্যাডমিশন কমিটি মুগ্ধ হয়ে যায়। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার সাথে হার্ভার্ডে পড়তে চাইবার কারণ, গ্রাজুয়েশনের পর এই ডিগ্রি নিয়ে কী করবে এগুলো ভালোভাবে সাজিয়ে গল্পটা দাঁড় করাতে হবে।
পাঁচ) হার্ভার্ডে না পড়তে পারলে জীবন বৃথা এইরকম উদ্ভট, ফালতু চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে নিজের সাধ্য অনুযায়ী এই লক্ষ্যের পিছনে সময়, শ্রম ও মেধা ব্যয় করতে হবে। গান্ধী বা বঙ্গবন্ধু হার্ভার্ডে না পড়েই জাতির জনক হতে পেরেছিলেন, আইনস্টাইন হার্ভার্ডের ছাত্র ছিলেন না- বিষয়গুলো মাথায় রেখে প্রফুল্ল চিত্তে স্বপ্নের পিছনে ছুটতে হবে। স্বপ্ন ছুঁতে পারলে খুব ভালো, না পারলেও হতাশ না হয়ে মাথা উঁচু রাখতে হবে।
আপাতত এটুকুই।