মো. বাকীবিল্লাহ: আপনার কি কখনো এমন হয়েছে যে, ব্যর্থতার ভয় পেয়ে কাজটি করাই বন্ধ রেখেছেন? ব্যর্থতার ভয় আমাদের সবার মাঝেই কম-বেশি কাজ করে। কেউ ভয় পেয়ে কাজ করা থেকেই বিরত থাকেন। আবার কেউবা ব্যর্থতার ভয়কে জয় করে সামনে এগিয়ে যান। অবশ্য দ্বিতীয় ধরনের লোকেরাই জীবনে সফল হন।
ব্যর্থতার ভয়ে চেষ্টা ছাড়াই কোনো কাজ ছেড়ে দেয়ার ফলে আপনি স্থির ও অচল হয়ে পড়তে পারেন। তবে সৌভাগ্যের বিষয় হলো, আপনি ৫টি পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যর্থতার ভয়কে জয় করতে পারেন।
ব্যর্থতার ভয় কী?
পৃথিবীতে সবাই চায় ভালো কিছু করতে। নিজের জীবনমান উন্নত করতে। আর উন্নত জীবনের জন্য দরকার উন্নত চিন্তা, পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন।
কিন্তু এখানেই সমস্যা। কোনো কিছু চিন্তা আসার পরে আমরা ভাবতে বসে যাই, যদি সফল হতে না পারি? তখন কী উপায় হবে?
এটাও খুব বেশি সমস্যা না। এমনটা হতেই পারে। কিন্তু ব্যর্থ হতে পারেন সেকথা মনে করে যখন কেউ কাজটাই বন্ধ করে দেন, তখন সেটা হয়ে যায় ব্যর্থতার ভয়। যা মারাত্মক পরিণতি বয়ে নিয়ে আসতে পারে আপনার জীবনে। তাই ব্যর্থতার ভয়কে প্রতিরোধ করা খুবই জরুরি।
কিভাবে ব্যর্থতার ভয়কে জয় করবেন?
ব্যর্থতার ভয়কে জয় আপনাকে কররতেই হবে। এটা জীবনের জন্যে। সমৃদ্ধির জন্যে। নিচের পাঁচটি পদক্ষেপ অনুশীলন করুন। আশা করি সফলকাম হতে পারবেন।
১. ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
আপনি যখন ব্যর্থতার ভয়ে থাকেন, তখন ভবিষ্যতের চিন্তা ও পরিকল্পনা করা দূরহ। তবে ছোট ও অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ, আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেষণা দিতে পারে। তাই প্রারম্ভিক অর্জনগুলো চিহ্নিত করে তা উদযাপন করুন।
২. সম্ভাব্য সব ফলাফল বিশ্লেষণ করুন
অধিকাংশ মানুষে ব্যর্থতার ভয় মূলত অজানাকে কেন্দ্র করে। আপনার সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য সব ফলাফল বিশ্লেষণ করুন। ভালো ও খারাপ দুটোই। সম্ভাব্য ফলাফল আগে থেকে চিহ্নিত করতে পারলে, সে অনুযায়ী নিজেকে নিয়ন্ত্রণ ও প্রস্তুত করা সম্ভব হবে।
৩. সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিটি বিবেচনায় নিন
নিজেকে প্রশ্ন করুন, ‘বাস্তবিকপক্ষে সবচেয়ে খারাপ কী ঘটতে পারে?” কখনো কখনো সবচেয়ে খারাপ ফলাফলটিও মোটের ওপর মন্দ হয় না।
৪. বিকল্প পরিকল্পনা রাখুন
আমরা সকলেই কখনো বা কখনো ব্যর্থ হই। তবে চেষ্টা বন্ধ রাখা উচিৎ না। আপনার কোনো বিকল্প পরিকল্পনা থাকলে ভালো হয়। এতে করে আপনি ব্যর্থতার পর দ্রুত ফিরে আসতে পারবেন। তাছাড়া সামনে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে আপনার দুশ্চিন্তা কমে যাবে।
৫. ইতিবাচকভাবে চিন্তা করুন
ইতিবাচক স্বীকৃতির মাধ্যমে আপনার চিন্তাকে পুনর্বিন্যাস করুন। যেমন: ‘আমি এটা করতে পারি!’ এবং ‘ কাজটির জন্য আমিই উপযুক্ত ব্যক্তি’। এটা আপনাকে বাস্তব ও যুক্তিসম্পন্ন চিন্তা করতে সহায়তা করবে। একইসাথে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করবে।
সর্বোপরি মনে রাখবেন, ব্যর্থতা জীবনে একটি সাধারণ ঘটনা। এর মানে এই নয় যে, আপনি সফল হতে পারবেন না। ধীরে ধীরে কিন্তু অবিচলভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে আপনি ব্যর্থতার ভয়কে জয় করতে শুরু করবেন।
সূত্র : Mindtools