ভারতের আইকন ব্যবসায়ী রতন টাটা। ইন্ডিয়ান স্কুল অব বিজনেসের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দেওয়া এক অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্যে তিনি বলেন, ”অনেক সময় তোমরা শুনে থাকো ‘এ কাজটি সম্ভব নয়, এটা খুবই কঠিন কাজ’।
আমি বলব, শিক্ষার্থীরা যখন তাদের কলেজ ত্যাগ করে তাদের অবশ্যই ‘সম্ভব নয়’-এর মিথ ভাঙতে হবে। দেশে অনেক কিছুই হতে পারে; কিন্তু যেসব মানুষ এমন সম্ভব নয় জাতীয় মানসিকতা ধারণ করে, তারা আসলেই কিছু করতে পারে না।’
আগামী দিনে তোমরাই দেশের নেতৃত্ব দেবে। দেশের ভবিষ্যৎ সাফল্য তোমাদের কাঁধে। ‘এ কাজটি করা সম্ভব নয় বা এটা হবে না’- এ জাতীয় বাক্যগুলো মনে স্থান দেবে না। চতুর্দিকে একবার তাকাও, দেখতে পাবে এ বিশ্ব সাফল্যে ভরা। বড় বড় কোম্পানির দিকে তাকাও, এসব কোম্পানি প্রতিষ্ঠায় তারা আইডিয়া কোথায় পেয়েছে। মাইক্রোসফট, গুগল, ফেসবুক, অ্যাপল এবং অ্যামাজনের মতো কম্পানিগুলো কী করে হলো? এ কম্পানিগুলো হয়েছে কারণ কিছু মানুষ চিন্তা করেছে এ কাজটি করা সম্ভব। যখনই কোনো মানুষ ভাবে, এ কাজটি সম্ভব, তখনই তা সম্ভব হয়।
তোমাদের কাছ থেকেও আমাদের প্রত্যাশা, নেতিবাচকভাবে কোনো কিছু দেখবে না। যদি চিন্তা করা যায় তবে একটি বড় কাজও সম্পন্ন করা যাবে। আরেকটি কথা মনে রাখতে হবে, জীবনে তুমি যত বড় সফল হও না কেন, বিনয় ছাড়া যাবে না। এমনকি একজন নোবেল বিজয়ীর পাশে বসলে তিনি তোমাকে বুঝতে দেবেন না যে এত বড় পুরস্কার তিনি জিতেছেন। অথচ তার আশপাশের মানুষগুলো জানে তার কৃতিত্ব। সমাজের জন্যও তোমাকে কিছু করতে হবে, যাতে তোমার সাফল্য অন্যদের জন্যও সুফল বয়ে আনে। কত টাকা তুমি আয় করো কিংবা কোন অবস্থানে তুমি আছ- কখনোই সাফল্যকে এভাবে বিবেচনা করবে না। অথবা সমাজে তুমি কতটুকু সম্মানিত, সেটিও সাফল্যের মাপকাঠি নয়। বরং তোমার সাফল্যের মাপকাঠি হচ্ছে তুমি যখন রাতে ঘরে ফেরো তখন এ তৃপ্তি নিয়ে এসেছ যে তুমি সমাজের জন্য কিংবা দেশের জন্য কিছু করতে পেরেছ। তোমার অংশগ্রহণ অল্প হতে পারে; কিন্তু এটিই হচ্ছে সাফল্যের মাপকাঠি।
আমি বিশ্বাস করি, সত্যিকারে নেতা সে, যার একটি স্বপ্ন থাকে, সেই স্বপ্ন অনুযায়ী কাজ করতে থাকে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে নিজের করে নেওয়ার জন্য। আমাদের বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই বিশ্বের বড় বড় ব্যবসায়ীকে অনুস্মরণ করে। তোমাদের অবশ্যই এ প্রবণতা ভাঙতে হবে এবং নিজেদের সফলতার নতুন কাহিনি লিখতে হবে। এ জন্য তোমাদের প্রয়োজন দৃঢ়তা, যোগ্যতা এবং আত্মবিশ্বাস।