ভাইভা বোর্ডে করণীয়

ভাইভা বোর্ডে ভালো করতে হলে আপনাকে হতে হবে আত্মবিশ্বসী ও বিনয়ী। ভাইভা বোর্ডে ব্যক্তিত্ব বিকাশে কৌশলী হোন এবং কথায় নিজের জ্ঞানের স্ফুরণ ঘটাতে চেষ্টা করুন। ভাইভা বোর্ডে করণীয় সম্পর্কে লিখেছেন মো: শহীদুর রহমান ভূঁইয়া

১। আপনি মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হলে ভাইবার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে থাকুন।

২। যে বিভাগের যে পদের জন্য পরীক্ষা দিয়েছেন যেমন- পুলিশ ইন্সপেক্টর বা কাস্টমস অফিসার বা অন্য কোনো বিভাগের কোনো পদে। তা হলে সে বিভাগের সর্বশেষ তথ্য জেনে নিন। যেমন- বিভাগীয় প্রধানের নাম, তার সরকারি পদমর্যাদা, দেশের কোথায় কোথায় এর শাখা অফিস রয়েছে, এ বিভাগের মূল কাজ কী, আপনি যে পদের জন্য প্রার্থী সে পদের দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রভৃতি। কোনো উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠানে আবেদন করে থাকলে যেমন- চিনিকল, পাটকল প্রভৃতি; তা হলে ওই শিল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারেন। চিনিশিল্প নিয়ে যে সব প্রশ্ন হতে পারে তা হলো- দেশে চিনিকল কতটি, এদের মোট উৎপাদন কত? কতটি মিল চালুু বা বন্ধ আছে? সর্বশেষ বন্ধ হওয়া মিল কোনটি? কত টন উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে মিলটি চালু ছিল, বন্ধকালীন সময় মিলটির উৎপাদন কত টন ছিল? মিলটির জনশক্তি কত ছিল, সেটির সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উৎপাদন কত টন ছিল প্রভৃতি খুঁটিনাটি সব জেনে নিন।

৩। আপনি যে বিভাগের যে পদের জন্য আবেদন করেছেন সে বিভাগ ছাড়াও অন্য যেকোনো বিষয়ে প্রশ্ন হতে পারে। যেমন- কৃষি, মৎস্য, গার্মেন্ট, পোলট্রি, হ্যাচারি, চলমান বিশ্ব, চলমান বাংলাদেশ প্রভৃতি বিষয়ের সর্বশেষ তথ্য জেনে নিন।

৪। আপনি যে বিষয়ে পড়ালেখা করেছেন সে বিষয়েও প্রশ্ন করা হতে পারে। আপনার সাবজেক্ট অ্যাকাউন্টিং আর আপনার পদ যদি হয় অ্যাকাউন্টস অফিসার তা হলে আপনি নিশ্চিত থাকুন আপনার সাবজেক্ট থেকে প্রশ্ন করা হবেই।

৫। সাম্প্রতিক বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে নোট করে পড়–ন। জাতীয় দৈনিক পত্রিকা থেকে দেশী ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। মনে রাখবেন, মৌখিক পরীক্ষায় সাধারণত সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া বা চলমান বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়।

৬। সামাজিক বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে নিন। দেশের সাফল্য, ব্যর্থতা, দিবস, আন্তর্জাতিক সংস্থা, সাহায্য, সহযোগিতা প্রভৃতি বিষয়গুলো জেনে নিন।

৭। দেশের অর্থনীতি নিয়ে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন হতে পারে। দেশের জন্ম হার, মৃত্যু হার, শিক্ষার হার এ বিষয়গুলো আত্মস্থ করুন।

৮। বন্ধুদের সাথে যেভাবে ফ্রিভাবে আড্ডা দেন ভাইভা বোর্ডেও সেভাবে নিজেকে স্বাভাবিক রাখুন।

৯। পরীক্ষার নির্ধারিত দিনের পূর্ব রাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে রাখুন।

১০। নির্ধারিত সময়ের আগেই গন্তব্যে পৌঁছে আপনার উপস্থিতি নিশ্চিত করবেন।

১১। সুন্দর ও মার্জিত পোশাক পরিধান করে ভাইভা বোর্ডে যাবেন ও চেহারায় ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলুন।।

১২। ভাইভা বোর্ডে আপনার ব্যক্তিত্বকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে। আপনার কথায় আপনার জ্ঞানের গভীরতা প্রকাশ পায়। ব্যক্তিত্ব বিকাশে কৌশলী হোন এবং কথায় নিজের জ্ঞানের স্ফুরণ ঘটাতে চেষ্টা করুন।

১৩। প্রশ্ন শোনার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন, যাতে প্রশ্নকর্তার প্রশ্ন একবার শুনেই উত্তর দিতে পারেন। বুঝতে অসুবিধা হলে বিনয়ের সাথে পুনরায় জেনে নিন।

১৪। ভাইভা বোর্ডে ডাক পড়ার সাথে সাথে হাসিমুখে রুমে ঢুকে সালাম দিন।

১৫। আপনার জন্য নির্ধারিত চেয়ারে বসে আকর্ষণীয় চেহারায় থাকুন। নার্ভাস হবেন না। মনে করবেন বোর্ডের সবাই আপনার পরিচিতজন, আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী।

১৬। প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিন। তাড়াহুড়া করবেন না।

১৭। ইংরেজিতে প্রশ্ন করলে উত্তরও ইংরেজিতে দেবেন।

১৮। আপনার আত্মবিশ্বাস পরীক্ষা করার জন্য ভাইভা বোর্ডে প্রশ্নকারীরা আপনাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে পারেন। আপনি যদি মনে করেন আপনার উত্তর সঠিক তা হলে বিভ্রান্ত না হয়ে আপনার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরুন।

১৯। হোয়াইট/ব্লাক বোর্ডে কিছু লিখতে বললে বা কোনো ছক আঁকতে বললে স্পষ্ট ও সুন্দর করে লিখুন যাতে বোর্ড সদস্যরা তা দূর থেকে বুঝতে পারেন।

২০। অপ্রাসঙ্গিক কোনো উত্তর দেবেন না।

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top