অ্যানড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপার কিভাবে হবেন?

সফল অ্যানড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপার কিভাবে হব?

অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট একদম সাধারণ কোনো বিষয় নয়। আবার খুব কঠিনও নয়। তবে এটা অনেক লম্বা একটা জার্নি। অন্ততপক্ষে এক থেকে দেড় বছর সময় ডেডিকেটেড ভাবে আপনাকে এর জন্য ব্যয় করতেই হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৪-৫ ঘন্টা, বেশি হলে আরো ভালো।

তো, এ জন্য প্রথমেই আপনাকে তিনটা জিনিস শিখতে হবে।

  • সঠিক ভাবে কম্পিউটার চালানো জানতে হবে।
  • ইংরেজি পড়ে বোঝার মত জ্ঞান থাকতে হবে। প্রথম অবস্থায় ব্যাসিক লেভেল হলেও চলবে।
  • আর যেকোনো জিনিস শেখার জন্য সঠিকভাবে গুগল করা জানতে হবে।

মনে রাখবেন, সফটওয়্যার ডেভেলপিং করতে গেলে প্রতিনিয়ত আপনাকে নতুন নতুন জিনিস শিখতে হবে। নিত্যনতুন টেকনোলজির সাথে আপনাকেও আপডেট থাকতে হবে। নইলে আপনার স্কিল পুরনো হয়ে যাবে আর আপনি এই ফিল্ড থেকে হারিয়ে যাবেন। আর এজন্যই আপনার উপরের তিনটি পয়েন্ট ভালোভাবে জানতে হবে। এর পর আপনার মূল শেখাটা শুরু হবে।

যেকোনো ধরনের সফটওয়্যার তৈরি করতে গেলে প্রথমত এক বা একাধিক ল্যাঙ্গুয়েজ জানতে হয় খুব ভালো ভাবে। আপনি যদি প্রোগ্রামিং এ একদমই নতুন হন তবে প্রথমত সি ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে শুরু করাটা বেটার। অন্তত ১ থেকে দেড় মাস সময় এখানে দিলে আপনার প্রোগ্রামিং এর একটা ভিত্তি তৈরি হবে।

শেখার সাথে সাথে প্রবলেম সল্ভিং করবেন বিভিন্ন অনলাইন সাইটে। এটা আপনার ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহারের ক্ষমতা বাড়াবে।

এরপর আপনাকে বেছে নিতে হবে আপনি কোন ট্রাকে যাবেন, শুধু অ্যান্ড্রয়েড, নাকি সাথে আইফোন অ্যাপও? যদি দুটোই শিখতে চান তবে React Native ফ্রেমওয়ার্ক জানতে হবে। এজন্য JavaScript জানতে হবে।

আর যদি শুধু এন্ড্রয়েড শিখতে চান তবে জাভা বা কটলিন ল্যাঙ্গুয়েজ শিখবেন। নতুনদের জন্য একটাতে ফোকাস করাই ভালো।

মোটামুটি ৩-৪ মাস সময় নিন এই পিরিয়ডে। সাথে প্রবলেম সল্ভিং চালিয়ে যান, জাভা দিয়েই। শিখে ফেলুন অবজেক্ট অরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং(OOP), বিভিন্ন ডাটা স্ট্রাকচার, অ্যালগোরিদম, ও এগুলোর ব্যবহার। এইটুকু শেষ করতে করতে আপনার ইন্টারনেটের ব্যবহার ও ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডাটা কিভাবে আদান প্রদান হয় এগুলো সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা চলে আসবে। এবং, এই পর্যায়ে আপনি অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপার হওয়ার জন্য শেখা শুরু করতে পারবেন।

মনে রাখবেন, এই পর্যন্ত যা যা লিখেছি সেগুলো খুব ভালো করে শিখতে হবে, নইলে পরের ধাপে গিয়ে হোঁচট খেতে হবে। এরপরের ধাপ গুলো আপনাকে নিজেই গুগল করে খুজে নিতে হবে, তাই ডিটেইলস বলব না। (সহজেই পাবেন। অনেক ফ্রি বা পেইড রিসোর্স আছে) অথবা মানসম্মত ট্রেনিং সেন্টার বা কোনো ভালো ডেভেলপার থেকেও শিখতে পারেন।

তো, জাভা শেখা হয়ে গেলে আপনার কাজ হলো অ্যান্ড্রয়েড স্টুডিও ইন্সটল করা। Gradle কি ? এবং তা কিভাবে কাজ করে ? কিভাবে অ্যান্ড্রয়েড স্টুডিওতে একটা প্রজেক্ট শুরু করতে হয় ? এগুলো গুগল করে জানা, এবং এগুলো জানতে গিয়ে যা যা আপনার অজানা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সেগুলো সম্পর্কে ধারণা নেওয়া।

এরপরে, XML বা Material Design দিয়ে লেআউট তৈরি করতে শেখা। Activity, Activity Life Cycles, Fragments, Intents, Intents life cycle ইত্যাদি শেখা। এরপরে বিভিন্ন API থেকে ডাটা নিয়ে প্রদর্শন, REST আর্কিটেকচার, অ্যাপ হোস্ট বা ডিপ্লয়মেন্ট, ইত্যাদি। এই ধাপ গুলো শিখতে ছয় মাস থেকে একবছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

উপরের প্রত্যেকটা ধাপে আপনাকে প্রচুর প্র্যাক্টিস করতে হবে বিভিন্ন পোর্টফোলিও বানাতে হবে। এই পোর্টফোলিও দেখেই বিভিন্ন কোম্পানি আপনাকে ইন্টারভিউতে জাজ করবে।

সুতরাং গুগল করুন আর শিখতে থাকুন।

পরামর্শ দিয়েছেন : রুবাইয়াত মাহমুদ (Rubayet Mahmud); সফটওয়্যার ডেভেলপার, আইটিপ্রেমী ও লেখক

2 thoughts on “সফল অ্যানড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপার কিভাবে হব?”

  1. অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপারদের কাজ কি শুধুই অ্যাপস তৈরি করা নাকি অ্যাপস অ্যাপস তৈরির পর ভিতরে লেখাগুলো তাকেই লিখতে হয় ।প্লিজ জানাবেন

    1. মো. বাকী বিল্লাহ

      ডেভেলপারের কাজ তো ডেভেলপ করাই। তবে ক্লায়েন্টের সাথে আপনার চুক্তির আলোকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে লেখাগুলো আপডেট করতে হতে পারে। তবে লিখে দেওয়াটা ডেভেলপারের কাজ না। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। ক্যারিয়ার ইনটেলিজেন্সের পক্ষ থেকে শুভ কামনা আপনার জন্য।

Comments are closed.

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top