মানসূরা আক্তার মৌ
ঘটনা ১ : সামনের মাস থেকে বেকারের খাতায় নাম লিখব বলে হন্যে হয়ে একটা tuition খুঁজছি। হলের সামনে বিজ্ঞাপন দেখে ফোন দিলাম। ছাত্রের মায়ের সাথে কথা হলো। Intermediate এর background, CGPA, পড়ানোর পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং কিছু General knowledge জিজ্ঞেস করে আমায় justify করল! আমি তার কাছে বেতন এবং পড়ানোর দিন জানতে চাইলাম।
ক্লাস নাইনের English Version student, সপ্তাহে পাঁচদিন ২ ঘন্টা করে পড়াতে হবে। বেতন : ৩ হাজার। আমার মনে হয় গার্মেন্টসে চাকরি নিলেও এর চেয়ে বেটার অফার পেতাম।
যদি এরা financially insolvent থাকতো তবুও মানা যেত। ওই ভদ্র মহিলা নিজে BCS qualify এবং উচ্চপদস্থ। তার স্বামী বুয়েট থেকে পাশ করে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করছেন। তবুও শিক্ষকের প্রাপ্যটা তারা কেন দিতে চান না?
কিছু কিছু guardian আছে, যারা গৃৃহশিক্ষদের ভাবেন গরীবের চেয়েও গরীব। ছোটলোকের চেয়েও ছোটলোক। ন্যূনতম সম্মানটুকুও দেন না। বলি মহাশয়, মানুষকে সম্মান দেওয়া আপনি যদি না শেখান, আপনার সন্তান বখে গেলে এর দায় কিন্তু আপনারই!
Public university-তে যে বা যারা আসে তারা maximum middle class family but with higher excellency of educational quality! তাদেরকে একটু support দেওয়া আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব। এখানে এত হিসেব কেন বলুন তো?
আর শিক্ষকদের সম্মানিত করলে ultimately আপনার সন্তান কেয়ার আর দোয়া দুটোই পাবে। দয়া করে সামর্থ অনুযায়ী গৃহশিক্ষকদের সম্মানী প্রদান করুন।
ঘটনা ২ : ক্লাস ফাইভ থেকে টেন পর্যন্ত আমি গৃহশিক্ষকের কাছেই পড়তাম। আমার এখনো মনে আছে মা প্রতি ঈদে স্যারকে পোশাক কিনে দিতেন। গরম উপলক্ষে ছাতা আর শীত উপলক্ষে সোয়েটার দিয়েছেন। বাসায় ভালো রান্না হলে ওইদিন না আসলে ফ্রিজে রেখে পরের দিন দিতেন। আর প্রতিদিন মোটামুটি ভালো মানের নাস্তা। ক্লাস এইটে যে স্যারের কাছে পড়তাম উনি হিন্দু ছিলেন। মুসলিম রান্না খেতে পারতেন না বলে মা শুধু স্যারের জন্য রুটি, সবজি আর ডিম ভাজি করতেন। আমার বাবা বেসরকারি হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তাই বেতন পেতেন মাসের মাঝামাঝি। কিন্তু মা আগের মাসেই স্যারদের বেতন গুছিয়ে রাখতেন এবং ১ তারিখের মধ্যে স্যারের বেতন দিতেন।
আমি খুব মেধাবী ছাত্রী না। মা-বাবা, শিক্ষকদের দোয়ার বরকতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া। আল্লাহ
আমার দ্বিতীয় মা-বাবা অর্থাৎ শিক্ষকদের ভালো রাখুন।
আসুন! আমরা গৃহ শিক্ষক থেকে শুরু করে সব শিক্ষককে সম্মান করি।
লেখক : শিক্ষার্থী, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়