ঘরে বসে ইনকাম করার ২১ উপায়

ঘরে বসে ইনকাম করার ২১ উপায়

মাকসুদুর রহমান : আজকাল ‘ঘরে বসে ইনকাম’ একটি বহুল আলোচিত বিষয়। কমনওয়েলথের তথ্যমতে, করোনা মহামারীতে শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই ১৬ মিলিয়ন মানুষ চাকরি হারিয়েছে। অন্যান্য গবেষকদের মতে, সংখ্যাটি ২০-৪০ মিলিয়ন। যেহেতু প্রতিদিনই অনেক মানুষ চাকরি হারাচ্ছে, তাই তারা ঘরে বসে অর্থ উপার্জনের উপায় খুঁজছেন। তাই এই লেখাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এমনকি আপনিও যদি চাকরি হারিয়ে ফেলেন, তবে ঘরে বসে উপার্জন করতে শেখা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটা চাকরি কখনোই অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার জন্য যথেষ্ট নয়, যদি না আপনি বড় কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন।

বলা হয়ে থাকে যে, প্রত্যেক কোটিপতির গড়ে সাতটি করে আয়ের উৎস থাকে। আর এটাই তাদের ঝুঁকি হ্রাস করে আরো বেশি অর্থ উপার্জন করতে সাহায্য করে। এই লেখাটি আপনাকে অর্থ উপার্জনের একুশটি উপায় সম্পর্কে জানাবে যা আপনি এখনই খুব সহজে ঘরে বসে শুরু করতে পারেন।

ঘরে বসে উপার্জনের ২১ উপায়

১. একটি ব্লগ শুরু করুন

উপার্জনের একটি অন্যতম ভালো উপায় হচ্ছে ব্লগ। এটি শুরু করা ও পরিচালনা করা সহজ। একটি ব্লগ শুরু করতে হলে আপনাকে নিম্নের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে-

উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করুন
প্রথমেই আপনি কোথায় লিখবেন, কাকে লিখবেন সেটি নির্ধারণ করুন। আপনার কনটেন্টের চাহিদা তৈরি করতে বড় কোনো প্লাটফর্ম বাছাই করুন।

একটি ডোমেইন
আপনার ব্লগের সাথে যায়, এমন একটি নাম নির্বাচন করুন। যেমন ধরুন আপনি স্কিল নিয়ে লেখালেখি করতে চান। সেক্ষেত্রে আপনার ডোমেইন নাম হতে পারে- skilltypes.com। আপনি সর্বনিম্ন এক ডলারের বিনিময় একটি ডোমেইন কিনতে পারেন। নিশ্চিত করুন যে, আপনার নামটি ছোট এবং আপনার পছন্দের বিষয়বস্তুর সাথে সম্পর্কিত।

একটি হোস্টিং
হোস্টিং কোম্পানি আপনার ওয়েবসাইটের তথ্য তাদের সার্ভারে সংরক্ষণ করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্রাউজারে পাঠায়। আপনাকে অবশ্যই একটি ভালো হোস্টিং কোম্পানি বেছে নিতে হবে। কারণ এর উপরেই নির্ভর করবে আপনার ব্লগের পারফর্মেন্স।

ডিজাইন দক্ষতা
ব্লগটি তৈরি করতে আপনাকে কারো না কারো সহযোগিতা নিতে হবে। অথবা নিজেই শিখে কাজ শুরু করতে পারেন। অনেক হোস্টিং কোম্পানি ওয়েবসাইট নির্মাতাকে ব্যবহার করার জন্য একটি সহজ অ্যাক্সেস সরবরাহ করবে।

কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু
ব্লগের ক্ষেত্রে কনটেন্টই হলো আসল। বড় এবং ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করুন।

আয় করুন
একটি ব্লগ শুরু করার পর উপার্জনের জন্য প্রথম কাজই হচ্ছে এটিকে মনিটাইজ করা। আর এর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো গুগল অ্যাডসেন্স প্রোগ্রামটি ব্যবহার করা। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। এইভাবে আপনি ঘরে বসে আয় করা শুরু করতে পারেন।

ইউটিউব ভিডিও
আজকাল টাকা উপার্জনের আরেকটি সেরা উপায় হচ্ছে ইউটিউব ভিডিও বানানো

২. ইউটিউব ভিডিও বানানো

আজকাল টাকা উপার্জনের আরেকটি সেরা উপায় হচ্ছে ইউটিউব ভিডিও বানানো। প্রতি মাসে গড়ে ১.৯ বিলিয়নের বেশি মানুষ ইউটিউব ব্যবহার করে। এই প্লাটফর্মে প্রতি মিনিটে ৫০০ ঘণ্টারও বেশি ভিডিও আপলোড করা হয়।
ইউটিউব থেকে উপার্জন করতে হলে আপনাকে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে।

  • একটি ইউটিউব চ্যানেল শুরু করুন : এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা যায়। আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন করুন।
  • নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন : নিয়মিত ভিডিও আপলোড করে সেগুলোকে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে প্রচার করুন। এতে ভিউ ও আপনার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
  • সাবস্ক্রাইবার ও ভিউ অর্জন : আপনার চ্যানেলে ১ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার ও ৪ হাজার ঘণ্টা ভিউ অর্জন করুন।
  • গুগল অ্যাডসেন্সে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
  • আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে ইউটিউবের বিভিন্ন মনিটাইজেশন ফিচারের জন্য আবেদন করুন।
  • পর্যালোচনার জন্য জমা দিন: সবকিছু ঠিক থাকলে আপনাকে জানানো হবে।
  • বর্তমানে ভিডিও কনটেন্ট ও লিখিত কনটেন্টকে প্রায় কাছাকাছি ধরা হয় হয়। ভবিষ্যতে এর গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে।

৩. ই-বুক বিক্রি করুন

আপনি যদি ভালো লেখক হন তবে অনলাইনে ই-বুক বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। ১০,০০০ শব্দের ই-বুক তৈরি করে অ্যামাজনে আপলোড করুন। এছাড়াও আপনি নিজের ই-কমার্স স্টোর খুলতে পারেন। যা আপনার ব্লগের একটি অংশ হতে পারে। আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে, লেখার চেয়ে সেটি বিক্রি করা কঠিন। উদাহরণস্বরূপ, অ্যামাজনে লক্ষ লক্ষ বই রয়েছে। আর এ জন্য আপনাকে কেবল ভালো লেখক হলেই চলবে না বরং একজন ভালো বিক্রেতাও হতে হবে।

৪. স্পনসরড কনটেন্ট তৈরি করা

বিভিন্ন কোম্পানি প্রাসঙ্গিক লেখার বিনিময়ে টাকা দিয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার  ব্লগে অনেক ভিজিটর থাকে, তবে আপনি এই সম্পর্কিত কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে স্পনসরশিপের জন্য আবেদন করতে পারেন। এটি আপনার ই-বুক বা ম্যাগাজিনের জন্যও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

৫. পেইড গেস্ট ব্লগিং

কিছু কিছু সাইট তাদের কনটেন্ট তৈরি করতে ফ্রিল্যান্স লেখকদের টাকা দেয়। সম্ভাব্য বায়ারদের সাথে যুক্ত হতে ‘ফাইভার’ বা ‘আপওয়ার্ক’ এর মতো সাইটগুলো ব্যবহার করতে পারেন। ক্লায়েন্টের প্রত্যাশা পূরণে ভালো মানের কনটেন্ট লেখা নিশ্চিত করুন। এটি আপনাকে সফলতা এনে দিবে। ভালো মানের কনটেন্ট বলতে কার্যকরী এবং বাস্তবসম্মত কনটেন্টকে বোঝায়।

কখনোই সবকিছু নিয়ে লিখতে যাবেন না। এটি আপনার লেখার কার্যকারিতা কমিয়ে দিবে। কয়েকটি বিষয় নিয়ে নিন এবং তুলনামূলক দক্ষতার বিকাশ করুন। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এটি আপনাকে সুবিধা প্রদান করবে।

৬. ঘর ভাড়া দিন

অনেকেই আজকাল নিজেদের ঘর ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্জন করছে। আপনার যদি বড় একটি ঘর থাকে তবে আপনার এলাকায় বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য কিছু কক্ষ ভাড়া দিতে পারেন। গ্রাহক পেতে ফেসবুক তথা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সহায়তা নিতে পারেন।

৭. আপনার গাড়ি ভাড়া দিন

আপনি চাইলে আপনার গাড়িটি ভাড়া দিয়েও আয় করতে পারেন। দায়কে সম্পদে পরিণত করার এটি একটি ভালো উপায়। লোকজন বড় কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আপনার গাড়ি ভাড়া নিতে পারে। এছাড়া আপনার অবসরে কাছাকাছি কোনো ট্রিপ ধরতে পারেন। এক্ষেত্রে উবার বা পাঠাওয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। এভাবে গাড়ির ধরন ও অবস্থানের উপর ভিত্তি করে দৈনিক ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।

৮. অনলাইন কোর্স

বিশেষজ্ঞদের মতে এটি অর্থ উপার্জনের অন্যতম একটি সেরা উপায়। মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কিছু সম্পর্কে জ্ঞানদানের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করুন। আর এর জন্য আপনাকে এমন একটি কনটেন্ট তৈরি করতে হবে যা মানুষকে অধিক আয়ের দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করবে।
Udemy এবং Skillshare ইত্যাদি ওয়েবসাইট আপনার কনটেন্ট পোস্ট করার ভালো মাধ্যম। এছাড়া বাংলাদেশও বেশ কিছু ওয়েবসাইট গড়ে উঠেছে। সেগুলোতে অ্যাকাউন্ট খুলে কোর্স শুরু করতে পারেন। আপনার কোর্সের জন্য বাস্তবসম্মত ফি নির্ধরণ করুন এবং তার মার্কেটিং করুন। যখনই লোকজন এই কোর্সের জন্য রেজিস্ট্রেশন করবে, তখন থেকেই আপনার পরোক্ষভাবে উপার্জন শুরু হয়ে যাবে।
যদি আপনি লক্ষ লক্ষ লোককে কোর্স করাতে পারেন, তাহলে আপনি তাড়াতাড়ি অবসর নিতে পারবেন। কারণ এর মাধ্যমে আয় করা টাকায় আপনার পুরো জীবন কাটিয়ে দিতে পারবেন।
আপনি আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইটে কোর্সগুলি বিক্রি করতে পারেন। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী কৌশল।

৯. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

আপনি আলাদা করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর জন্য একটি ওয়েবসাইট শুরু করতে পারেন। এছাড়া আপনার ফেসবুক ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টও ব্যবহার করতে পারেন। যেখানে আপনি অন্য কারো পণ্যের মার্কেটিং করবেন। এখান থেকে কেউ পণ্য কিনলে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন।
আজকাল অনেক ব্লগারই এই উপায়ে টাকা উপার্জন করছে। এক্ষেত্রে সর্বাধিত প্রচলিত আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম হলো অ্যামাজন অ্যাসোসিয়েট প্রোগ্রাম। এছাড়া বাংলাদেশে ও ভারতের বেশ কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানও অ্যাফিলিয়েট সুবিধা দিচ্ছে।

১০. ড্রপশিপিং

ড্রপশিপিং হচ্ছে এমন একটি ব্যবসায়িক মডেল যেখানে আপনার কাছে মজুদ না থাকলেও অনলাইনে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। এটা কবেল অনলাইনে ক্রেতা এবং বিক্রেতাকে সংযুক্ত করার বিষয়।
ড্রপশিপিং খুবই সুবিধাজনক। কারণ এটিতে আপনার কোনো দোকান ভাড়া কিংবা পরিবহন খরচ নেই। আপনাকে কেবল অনলাইনে একটি স্টোর তৈরি করতে হবে। এই অনলাইন স্টোরটি অবশ্যই বিক্রেতাদের সাথে কানেক্টেড থাকতে হবে। যখন কোনো অর্ডার হবে, তখন বিক্রেতা ক্রেতার নিকট পণ্যটি পাঠিয়ে দিবেন।
এখানে আপনার কাজ খুবই সামান্য। আপনি কেবল পণ্যগুলি মার্কেটিং করবেন। এবং যত বেশি সম্ভব লোককে পণ্যটি কিনতে আগ্রহী করবেন।

১১. লাইফ কোচিং

মানুষের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করেও আপনি অর্থ উপার্জন কতে পারেন। আর এটাই হলো লাইফ কোচিং।
এই ব্যাপারে আপনি গ্রো (GROW) মডেলটি ব্যবহার করতে পারেন। আর এর অর্থ হলো:

  • G– গোল: ক্লায়েন্টকে লক্ষ্য তৈরি করতে সাহায্য করুন।
  • R– রিয়ালিটি: ক্লায়েন্টকে বর্তমান বাস্তবতা বুঝতে হবে। আর এই বাস্তবতাই তাকে দেখিয়ে দিবে কী অর্জন করা উচিৎ আর কী অর্জিত হচ্ছে।
  • O– অপশন: ক্লায়েন্ট কোন অপশনগুলি নিয়ে আগাচ্ছে এবং কিভাবে এদের মধ্যেকার গ্যাপ পূরণ করবে
  • W-ওয়ে ফরওয়ার্ড: পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে ক্লায়েন্ট কোন অপশনটি বেছে নিবে।

এভাবে যদি আপনি মানুষকে সমস্যা সমাধানে সাহায্য করেন তবে তারা তাদের বন্ধুদেরকেও আপনার কাছে সাহায্য নিতে পরামর্শ দিবে। সেখানে আপনি টাকার বিনিময়ে পরামর্শ দেবেন। আর এই সবকিছু ঘরে বসেই সম্ভব।

১২. একজন ইনফ্লুয়েন্সার/প্রভাবক হয়ে উঠুন

একজন ইনফ্লুয়েন্সার যিনি মানুষকে প্রভাবিত করতে পারেন। তিনি খুব সহজেই ঘরে বসে অন্যের পণ্য প্রমোট করে টাকা আয় করতে পারেন। তবে, এক্ষেত্রে আপনার ডিজিটাল প্লাটফর্মে বড় অংকের ফলোয়ার থাকতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার যদি টুইটার, ইনস্টাগ্রাম অথবা ফেসবুকে অন্তত এক লক্ষ ফলোয়ার থাকে তাহলে আপনি কোনো কোম্পানির পণ্য প্রচার করার জন্য তাদের কাছে আবেদন করতে পারেন।

১৩. প্রাতিষ্ঠানিক লেখালেখি

এটি তরুণ স্নাতকদের টাকা উপার্জনের একটি বিখ্যাত পদ্ধতি। এখানে আপনি প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্যে কনটেন্ট তৈরি করবেন। এটা হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো গবেষণার প্রতিবেদন লেখা। অথবা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রোজেক্ট তৈরি করা।

১৪. ডিজিটাল অডিও ফাইল তৈরি

ডিজিটাল অডিও আজকাল খুবই জনপ্রিয়। অধিকাংশ লোকজনই পড়ার চেয়ে শুনতে পছন্দ করে। আপনি তথ্যমূলক অডিও ফাইলগুলির একটি সিরিজ রেকর্ড করতে পারেন, যা মানুষ শুনতে অথবা ডাউনলোড করতে পারে।
আপনার অডিও যদি হাজার হাজার মানুষ শোনে তবে আপনি স্পন্সর পেতে পারেন। স্পন্সর বিজ্ঞাপনের বিনিময়ে আপনাকে টাকা দিবে।

১৫. ওয়েব সেমিনার শুরু করুন

বর্তমানে টাকা উপার্জনের অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে ওয়েব সেমিনার। আপনি অনলাইনে একটি সেমিনার অয়োজন করবেন। বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে লোকজন টাকার বিনিময় এখানে অংশ নিবে।
স্পন্সর পেলে আপনি বিনামূল্যেও সেমিনার আয়োজন করতে পারেন।

১৬. অনলাইন সার্ভে

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জানতে চায় যে, লোকজন তাদের নানা বিষয়, পণ্য এবং আইডিয়া সম্পর্কে কী ধরনের মনোভাব পোষণ করছে। এজন্য তারা অনলাইনে বিভিন্ন রকম জরিপ করে থাকে। এটি তাদের পণ্য তৈরি ও বাজারজাত করার পদ্ধতি ঠিক করে দিবে।
আপনি অনলাইনে এই জরিপগুলেতে অংশ নিয়ে টাকা আয় করতে পারেন। InboxDollars, Swagbucks এবং MyPoints সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন জরিপ সাইট।

১৭. পুরাতন জিনিস বিক্রি

আপনি আপনার বাড়ির পুরাতন জিনিসপত্র বিক্রি করে অর্থোপার্জন করতে পারেন। হতে পারে আসবাবপত্র, ইলেক্ট্রোনিক্স কিংবা অটোমাইল। এক কথায়, যেসব জিনিস আপনি ব্যবহার করছেন না, সেগুলো বিক্রি করেই টাকা উপার্জন করতে পারেন। এক্ষেত্রে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও ক্লাসিফাইড বিজ্ঞাপনের ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

১৮. লভ্যাংশ প্রদানকারী স্টকে বিনিয়োগ করা

ঘরে বসে টাকা উপার্জনের ক্ষেত্রে এটা একটা ভালো উপায়। কেবলমাত্র ডিভিডেন্ড প্রদানকারী কোম্পানিগুলো থেকে স্টক কিনতে হবে এবং সেগুলো একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। এইসব স্টকগুলো কোনো পরিশ্রম ছাড়াই টাকা নিয়ে আসবে। তবে এক্ষেত্রে বুঝে শুনে এগুনোই বুদ্ধিমানের কাজ। নাহলে ধরা খাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।

১৯. মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন নির্মাণ

মোবাইল অ্যাপের প্রচুর ব্যবহার হয়ে থাকে। এগুলো খুবই কার্যকরী, কারণ একবার ইন্সটল করার পরে এগুলো মোবাইল ফোনে সবসময়ই দৃশ্যমান অবস্থায় থাকে। এগুলো ব্যবহারকারীকে প্রলুব্ধ করবে যখন তখন এগুলো ব্যবহার করার জন্য।
ভালোমানের ও পাঠক/ ব্যবহারকারীরর চাহিদা অনুযায়ী অ্যাপ তৈরি করে সেখানে গুগল বা অন্য কোনো নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপন বসিয়ে আয় করতে পারেন।

২০. নেটওয়ার্ক মার্কেটিং

আজকাল নেটওয়ার্ক মার্কেটিংয়ের অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অনেক মার্কেটার আছেন যারা কেবল মানুষকে একটি নেটওয়ার্কে যুক্ত করার মাধ্যমেই টাকা আয় করছে। তারা যত বেশি লোকদের যুক্ত করতে পারবেন, তাদের নেটওয়ার্ক তত বড় হবে। যখনই তাদের নেটওয়ার্কের কোনো ব্যক্তি লেনদেন করেন, তখনই তারা সেখান থেকে একটা কমিশন পায়।

তবে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হওয়ার আগে প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন, বুঝুন। তারপর ভালো মনে হলে অংশ নিন। বেশি টাকা বিনিয়োগ করবেন না। অনেকক্ষেত্রে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়ার আশংকা আছে।

২১. ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবসায়

বিটকয়েন এবং ইথেরিয়াম বেচাকেনার/লেনদেনের মাধ্যমে ঘরে বসেই আপনি টাকা উপার্জন/কামাতে পারেন। পৃথিবীর অগ্রগতির সাথেসাথে ক্রিপ্টোকারেন্সির সীমানা আরোও বিস্তৃত হবে। এক্ষেত্রেও আগে ভালোভাবে জানতে হবে। শিখতে হবে। নতুবা সমস্যায় পড়ার আশংকা রয়েছে।

শেষ কথা
উপরিউক্ত যে কোনো এক বা একাধিক উপায় বেছে নিয়ে আপনি ঘরে বসে বাড়তি আয় করতে পারেন। যা আপনাকে ব্যয় এবং বিনিয়োগের জন্য আরো বেশি অর্থ দেবে।
এগুলির যে কোনো একটিতে সফল হওয়ার জন্য আপনার কঠোর পরিশ্রম, অধ্যাবসায় ও ধৈর্য থাকা আবশ্যক। কোনো কাজই সহজ নয়। আপনি অনেক চ্যালেঞ্জ ও প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবেন। আপনি যদি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ না হন তবে আপনি কোনো ভাবেই সফল হতে পারবেন না।

মনে রাখবেন, টাকা ইনকামের জন্য দরকার মেধা ও সময়। এ দুটোর কোনোটাকে বাদ দিয়ে সফল হওয়ার চান্স নেই বললেই চলে। সুতরাং সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভালোভাবে জানুন, বুঝুন। তারপর কাজে নামুন। লেখা পড়েই কাজে নেমে পড়বেন না যেন!

উৎস :
[1] The Commonwealth Fund: How Many Have Lost Jobs with Employer Coverage During COVID

[2] Hootsuit: How to make money on Youtube

[3] MindTools

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top