সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগের পরীক্ষা (এমসিকিউ পদ্ধতির লিখিত পরীক্ষা) পহেলা ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ ব্যাপারে প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরবর্তী ২/৩ মাসের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষার শেষ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
২০১৮ সালের আগষ্ট মাসজুড়ে অনলাইনে এ নিয়োগের আবেদন গ্রহণ করা হয়। তাতে নিয়োগের ক্ষেত্রে রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী ২৪ লাখের বেশী আবেদন করেন। সারাদেশে ১২ হাজার আসনের বিপরীতে চাকরি প্রত্যাশী আবেদন করেছেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সঙ্কট নিরসনে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয় বিদায় বছরের আগষ্ট থেকে। আবেদন গ্রহণের পর গত বছরের ডিসেম্বর মাসে নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হওয়ায় কথা ছিল।
কিন্তু জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় প্রাথমিকের ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগের পরীক্ষা পিছাতে হয়েছে। তবে পরীক্ষার অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি লিখিত পরীক্ষা আয়োজনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রস্তুতি চলছে।
তবে, মন্ত্রণালয়ে নতুন প্রতিমন্ত্রী নিয়োগের প্রেক্ষিতে তার প্রশাসনিক অনুমোদন প্রয়োজন পড়বে। মন্ত্রণালয় সূত্র আরো জানান, আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত সভা করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।
পরীক্ষা ধরণ ও প্রস্তুতি সম্পর্কে মন্ত্রণালয় সূত্র জানান, নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, পরীক্ষা গ্রহণ করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর(ডিপিই)। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রশ্ন নির্বাচন করবে মন্ত্রণালয়। নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। পরীক্ষার সময়সূচি, ওএমআর ফরম ডিজাইন ও মূল্যায়ন, ফলাফল প্রকাশ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যারয়ের তত্ত্বাবধানে।
তবে, আগের নিয়ম অনুযায়ী এমসিকিউ পদ্ধতির লিখিত পরীক্ষা ৮০ নম্বর ও ভাইভায় ২০ নম্বর থাকবে। পুরনো নিয়োগ বিধিমালা অনুসরণ করেই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষায় আসন প্রতি তিনজনকে (একজন পুরুষ ও দুইজন নারী) নির্বাচন করা হবে। মৌখিক পরীক্ষার পর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
প্রার্থীরা dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। এছাড়া ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশাবলী এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য ওয়েবসাইটে (www.dpe.gov.bd) দেয়া যাবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সর্বশেষ তথ্য ও পরিসংখ্যান অনুসারে সারাদেশে ৬৫ হাজার ৯৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংখ্যা হচ্ছে ৩৭ হাজার ৬৭২টি, বিদালয় বিহীন গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ হাজার ২০৭ টি, নতুন জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৬ হজার ১৫৯ টি এবং পরীক্ষণ বিদ্যালয় ৬১টি। এসব স্কুলগুলোতে ১২ হাজারের বেশী ‘সহকারি শিক্ষক’ পদ শূন্য রয়েছে।
বিদায়ী বছরের আগস্টে অনলাইনে উক্ত শূণ্য আসনের বিপরীতে ঢাকা বিভাগে ৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৬০, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৩৩৫, রাজশাহী বিভাগে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৯২৫, খুলনা বিভাগে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৭৩০, বরিশাল বিভাগে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮২৭, সিলেট বিভাগে ১ লাখ ২০ হাজার ৬২৩, রংপুর বিভাগে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬৮ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ লাখ ৮২ হাজার ৪৩৭ জন আবেদন করেছেন বলে মন্ত্রণালয় ও ডিপিই সূত্রে বলা হয়েছে। সূত্র : নয়া দিগন্ত