আলকেমিস্ট : ১৪ কারণে আপনার পড়া উচিত বইটি

আলকেমিস্ট : ১৪ কারণে আপনার পড়া উচিত বইটি

মো: বাকীবিল্লাহ : ব্রাজিলের জীবন্ত কিংবদন্তী পাউলো কোয়েলো রচিত আলকেমিস্ট আন্তর্জাতিকভাবে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত, জীবনদর্শনে পরিপূর্ণ, ভাগ্য অনুসন্ধানের অনবদ্য এক উপন্যাস। বইটির ভাষাশৈলী ও বক্তব্য যেকোনো পাঠকের ভেতরকে নাড়িয়ে দেয়, উদ্দীপ্ত করে। আধ্যাত্মিক ও বাস্তব জীবনের উপলব্ধি নিয়ে পর্তুগিজ ভাষায় রচিত রূপকধর্মী উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে। বইটি অন্তত ৮০টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। অনেক দেশে সর্বকালের সেরা বিক্রিত বইয়ের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। বিশ্বের অনেক সফল ব্যক্তিত্ব, যেমন- বিল ক্লিনটন, জুলিয়া রবার্টস, উইল স্মিথ, ম্যাডোনা বিখ্যাত উপন্যাসটি পড়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

১. এটি মনে করিয়ে দেয় যে, আমরা সবাই ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য। আর তাই ভালোবাসার ন‍্যায‍্যতা প্রতিপাদনের দরকার নেই। কোয়েলোর ভাষায়- ‘একজন ভালোবাসে, তাই ভালোবাসে। ভালোবাসার জন্য কোনো কারণের দরকার নেই।’

২. এটি আমাদের স্বপ্নের পথে বেরিয়ে পড়তে আহ্বান জানায় এবং সে ভয়গুলো ভেঙে দেয়, যা আমাদের জীবনে পিছুটান তৈরি করে। পাউলো কোয়োলোর ভাষায়- ‘শুধু একটি বিষয় আমাদের স্বপ্নের বস্তু অর্জনকে অসম্ভব করে তোলে। তা হচ্ছে ব‍্যর্থতার ভয়।’

৩. বইটি আমাদেরকে কোনো কাজ ছেড়ে না দিয়ে সবসময় লেগে থাকতে প্রেষণা দেয়। লেখকের ভাষায়- ‘জীবনের গোপন সূত্র হচ্ছে, সাতবার পড়ে গিয়ে আটবার উঠে দাঁড়ানো।’

৪. এটি জীবনের ছোট ছোট বিষয়গুলোরও তারিফ করতে উৎসাহিত করে। লেখকের ভাষায়- ‘সাধারণ বিষয়গুলোও অসাধারণ। কেবল প্রজ্ঞাবান মানুষই তা দেখতে পারে।’

৫. এটি সত্যায়ন করে যে, আমাদের সবারই একটি জীবনোদ্দেশ‍্য আছে। আর তার পেছনে আছে একটি কারণ। কারণটি অন্যদেরগুলোর মতোই গুরুত্বপূর্ণ। পাউলো কোয়েলো লিখেছেন- কে কী কাজ করে, তা ব‍্যাপার না। প্রত্যেক মানুষই পৃথিবীর ইতিহাসে একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। সাধারণত সে তা জানে না।

৬. বইটি আরেকজনকে বিচার বিশ্লেষণ করার ব্যাপারে আমাদের মাপকাঠিগুলোকে পুনর্নির্মাণ করে। লেখকের ভাষায়- ‘নিজের চাওয়া অনুযায়ী অন‍্যকে না দেখলে মানুষ ক্রুদ্ধ হয়। মনে হয় যেন প্রত‍্যেকেই পরিষ্কারভাবে জানে, অন‍্যদের জীবন কিভাবে পরিচালনা করা উচিত কিন্তু নিজের জীবন সম্পর্কে না।’

৭. এটি আমাদেরকে অতীত নিয়ে পড়ে থাকতে নিষেধ করে। আর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত না হয়ে বর্তমানকে উপভোগ করতে বলে।
‘আমি অতীত বা ভবিষ্যতে বাস করি না। আমার আগ্রহ কেবল বর্তমানে। তুমি যদি সর্বদা বর্তমানে মনযোগ দাও, তাহলে তুমি হবে একজন সুখী মানুষ। জীবন হবে একটি পার্টি বা বড় উৎসব। কেননা জীবন হচ্ছে আমাদের বেঁচে থাকার এই মুহূর্তটি।’
– পাউলো কোয়েলো, আলকেমিস্ট

৮. বইটি আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার প্রশংসা করে।
‘একটি স্বপ্ন পূরণের আগে জগতের আত্মা পথজুড়ে শেখা প্রতিটি জিনিস পরীক্ষা করে। এটি খারাপ উদ্দেশ্যে করে তা নয়। বরং এজন্য করে, যাতে করে স্বপ্নপূরণ ছাড়াও আমরা স্বপ্নের পেছনে ছুটতে গিয়ে যা কিছু শিখেছি, সে সম্পর্কে আরো দক্ষ হয়ে উঠি। ঠিক এ পর্যায়ে এসেই বেশির ভাগ লোক স্বপ্নের পেছনে ছোটা বন্ধ করে দেয়। এ অবস্থাকে আমরা মরুভূমির ভাষায় বলি- দিগন্তে খেজুর গাছ দেখা যাওয়ার মুহূর্তে পিপাসায় মৃত্যু।’
-পাউলো কোয়েলো, আলকেমিস্ট

৯. এটি ভালোবাসা সম্পর্কে সত্যটি জানায় এবং মনে করিয়ে দেয় যে, ভালোবাসা কখনো আমাদের স্বপ্নপূরণের পথে অন্তরায় না। পাউলো কোয়েলোর ভাষায়- ‘তোমাকে অবশ্যই বুঝতে হবে, ভালোবাসা কখনো কাউকে তার ভাগ্য অনুসন্ধান তথা স্বপ্নপূরণ থেকে বিরত রাখে না। কেউ যদি এটা করে, তার অর্থ হচ্ছে- এটা সত্যিকারের ভালোবাসা ছিল না।’

১০. বইটি আমাদের ভালোবাসার শক্তি সম্পর্কে শিক্ষা দেয়। লেখকের ভাষায়- ‘যখন আমরা ভালোবাসি, তখন আরো ভালো হতে সংগ্রাম করি। যখন আরো ভালো হতে সংগ্রাম করি, তখন আমাদের আশেপাশের সবকিছুও আরো ভালো হয়ে যায়।’

১১. পাউলো কোয়েলের এ বইটি আমাদেরকে আত্মার বিবর্তন সম্পর্কে শিক্ষা দেয়। বইয়ের ভাষায়-‘তুমি যে-ই হও না কেন, কিংবা তুমি যে কাজেই লেগে থাকো না কেন, তুমি যখন সত্যিই কিছু করতে চাও, এর কারণ হলো- এই ইচ্ছার সৃষ্টি হয়েছে মহাজগতের আত্মা থেকে। দুনিয়ায় এটিই তোমার মিশন।’

১২. বইটি আমাদেরকে বাস্তববাদী হতে উৎসাহ দেয়। স্বপ্ন পূরণে প্রত্যয়ী রাখাল সব হারিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ায়, নিজেকে সান্ত্বনা দেয়-
‘আমি অন্য কারো মতো নই- আমি যেমন দেখতে চাই, দুনিয়াকে সেই দৃষ্টিতেই দেখি, আসলে যা ঘটছে, সেভাবে নয়।’
অন্য কথায়- ‘আমাদের যা কিছু আছে – জীবন, মালামাল ও সম্পত্তি- সবই হারানোর ভয় থাকে। তবে সব ভয় উবে যায়, যখন আমরা বুঝতে পারি, আমাদের জীবন-কাহিনী ও পৃথিবীর ইতিহাস একই হাতে লেখা হয়েছে।’
-পাউলো কোয়েলো, আলকেমিস্ট

১৩. আলকেমিস্ট আমাদের আশাবাদী হতে অনুপ্রাণিত করে। বলে- আমাদের সবারই ভাগ্য নির্মাণের শক্তি আছে। বইয়ের ভাষায়-
‘দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মিথ্যা কী?’ ছেলেটা জিজ্ঞাসা করল, একেবারে অবাক হয়ে।
‘এটি হলো এই : আমাদের জীবনের একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে, নিজেদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমরা ভাগ্যের পুতুল হয়ে যাই। এটিই দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মিথ্যা।’

১৪. স্রষ্টা আমাদের পক্ষেই আছেন- বইটি এমন আশাবাদ দেখায়। বইয়ের ভাষায়-
‘গুপ্তধন পেতে হলে তোমাকে শুভ-অশুভের ইঙ্গিত অনুসরণ করতে হবে। ঈশ্বর প্রত্যেকের জন্য একটি করে পথ তৈরি করে রেখেছেন। তোমাকে কেবল তোমার জন্য তৈরি পথে চলার জন্য শুভ-অশুভের নিদর্শন অনুসরণ করতে হবে।’

আলকেমিস্টের বেশ কয়েকটি বাংলা অনুবাদ বাজারে আছে। তবে সেগুলোর অনুবাদ এতটাই খটমটে যে, পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন অনেক পাঠক। বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে নতুনভাবে আলকেমিস্টের অনুবাদ প্রকাশ করেছে ক্যারিয়ার ইন্টেলিজেন্স। সাবলীল ও সহজবোধ্য ভাষায় বাংলাভাষী পাঠকদের সামনে তুলে ধরতে অনুবাদে যথেষ্ট মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন সাংবাদিক মোহাম্মদ হাসান শরীফ। এমন একটি আত্মোন্নয়নমূলক বই সব পাঠকেরই পড়া দরকার।

বইটি পেতে চাইলে ট্রেন্ডাজে অর্ডার করতে পারেন।

আরো পড়ুন : পরিবার : সংসারে সুখশান্তির গাইডলাইন

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top