খাতায় কলমে তারা ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু কাজ করেন ডেলিভারি বয় হিসেবে। পরিস্থিতির শিকার হয়ে বা জোর করে অথবা বাধ্য হয়ে নয়। তারা এই পেশায় এসেছেন নিজের পছন্দে। কারণ‚ ডেলিভারি বয়ের চাকরির লোভনীয় প্যাকেজ। সঙ্গে বোনাস এবং অন্যান্য খরচ।
ভারতের ব্যাঙ্গালোরের বিভিন্ন অনলাইন সংস্থায় এখন ইঞ্জিনিয়ারিং পাস ডেলিভারি বয়ের সংখ্যা মুড়ি-মুড়কির মতো। ব্যাঙ্গালোরে সদ্য পাশ করা মেকানিক্যাল বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের ফ্রেশার হিসেবে অনেক সময়েই বেতন প্যাকেজ হয় ১২ হাজারের আশপাশে। হাতে পাওয়া যায় ৯ হাজার রুপির মতো। সেখানে একজন ডেলিভারি বয় ঠিকঠাক কাজ করতে পারলে বেতন হয় ২০ হাজারের কাছাকাছি। সঙ্গে বোনাস‚ বাইকের পেট্রল খরচ এবং স্মার্টফোনের বিল।
অনলাইন অর্ডার নিয়ে খাবার পাঠায় ব্যাঙ্গালোরের এমন একটি সংস্থা জানাচ্ছে‚ তারা নিজেরাও উচ্চশিক্ষিত ডেলিভারি বয় নিয়োগ করে। কারণ‚ তাদের বিনীত শরীরী ভাষা এবং মুখে ঝরঝরে ইংরেজি পছন্দ করেন ক্রেতারা। ফলে বহু সংস্থায় নতুন নিযুক্তদের মধ্যে ৪০%ইঞ্জিনিয়ার‚ ৪০% গ্র্যাজুয়েট। নন গ্র্যাজুয়েট মাত্র ২০%।
আগে ডেলিভারি বয়দের বেতন কম থাকলেও এখন ক্রমবর্ধমান চাহিদার জন্য উন্নত হয়েছে তাদের বেতন কাঠামো। কাজের চাপ বেশি থাকে লাঞ্চ এবং ডিনার পঠানোর সময়। বাকি সময় চাইলে রাস্তায় বাইক-টহলও চলে। ফলে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেও তারা কাজ করছেন ডেলিভারি বয় হিসেবে। স্বেচ্ছায়। কোনো হীনমন্যতা ছাড়াই।
অনেক সংস্থা এখন ডেলিভারি বয়ের বদলে তকমা দিচ্ছে ডেলিভারি এক্সিকিউটিভ হিসেবে। কাজে দক্ষতা দেখাতে পারলে একদিন তারা হয়ে যান ম্যানেজার। ফলে প্রথমেই উচ্চশিক্ষিত যুবকদের ডেলিভারি বয় হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে। এমনকি‚ ডেলিভারি বয়দের প্রতি বদলাচ্ছে ক্রেতাদের দৃষ্টিভঙ্গিও।
শিক্ষিত পরিশীলিত শরীরী ভাষাসম্পন্ন ডেলিভারি বয়দের সামনে অনেকেই এগিয়ে দিচ্ছেন পানির গ্লাস। খাবার হাতে নিয়ে জানাচ্ছেন ধন্যবাদ। বেশি রাত হয়ে গেলে বলছেন‚ সাবধানে বাড়ি ফিরবেন!