বক্তৃতাভীতি দূর করার কৌশল

বক্তৃতাভীতি দূর করার কৌশল

মো: বাকীবিল্লাহ : বক্তৃতাভীতি দূর করার কৌশল জানার আগে দুটো রূপকল্পের দিকে নজর দেয়া যাক। এক. আহমেদ মাহদী। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে হয় তাকে। তবে বক্তৃতা পর্ব আসলেই মনের ভেতর কেমন যেন করে ওঠে। তখন চেষ্টা করেন ওই পর্বটি এড়াতে। কিন্তু চেয়ারম্যান হওয়ায় তা এড়ানো অসম্ভব। তাই কোনোভাবে দুয়েক কথা বলেই বসে পড়েন। অনেক কথা বলার থাকলেও বলতে পারেন না।

দুই. রওশন আক্তার। খ্যাতনামা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। একটি কোর্সে টিউটোরিয়ালের পরিবর্তে কাস প্রেজেন্টেশন করতে হবে। যথারীতি সব প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাসে উপস্থিত হয়েছেন তিনি। ম্যাডাম ক্লাসে আসলেন। অতঃপর শুরু হলো উপস্থাপনা পর্ব। কিন্তু ধীরে ধীরে হাত পা ঠাণ্ডা হতে লাগলো রওশনের। ভাবলেন উপস্থাপনা করবেন না। পরক্ষণে নম্বরের কথা চিন্তা করে মনকে শক্ত করলেন।  এরই মাঝে এলো তার উপস্থাপনার পালা। কিন্তু দাঁড়াতেই চোখে মুখে অন্ধকার দেখে ঢলে পড়লেন। সবাই ধরাধরি করে বেঞ্চের ওপর শুইয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরল তার।

আহমেদ মাহদী কিংবা রওশন আক্তারের মতো অনেকেই আছেন। বক্তৃতার পালা আসলে পায়ে কাঁপন ধরে যাদের। আসুন জেনে নিই বক্তৃতাভীতি দূর করার কৌশল।

বক্তৃতাভীতি দূর করার কিছু কৌশল

১. বলুন আমি নার্ভাস

বক্তৃতা শুরুর সময় উপস্থিত সবাইকে বলুন, আমার একটু নার্ভাস লাগছে। আপনি কতটুকু নার্ভাস তা নিয়ে মজা করুন। এতে করে মানুষ হিসেবে আপনার ভুল ত্রুটি ও নার্ভাসনেস দর্শক শ্রোতারা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

২. দর্শক শ্রোতাদের ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখুন

দর্শক শ্রেতাদেরকে নিজের হারিয়ে যাওয়া বন্ধু, ছাত্র-ছাত্রী কিংবা সহকর্মী হিসেবে ভাবুন। এতে করে তাদের সাথে কথা বলাটা আপনার জন্য অনেক সহজ হবে।

৩. ভিজ্যুয়াল মিডিয়ার সাহায্য নিন

আপনার কথাগুলো উপস্থাপনে ভিজ্যুয়াল মিডিয়া তথা প্রজেক্টরের সাহায্য নিন। পয়েন্টভিত্তিক উপস্থাপন করুন। কথার হ্যান্ডআউট দিন। এতে করে আপনার চেয়ে ওই সব জিনিসের দিকে নজর থাকবে দর্শকশ্রোতাদের।

৪. ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল করুন

কথা বলতে গিয়ে মাঝে মাঝে ইচ্ছাকৃত ভুল করে সেটি নিয়ে মজা করুন। বিশেষ করে নিরস আলোচনার ক্ষেত্রে। এতে শ্রোতাদের মনোযোগ নিজের দিকে রাখা সম্ভব হবে। তাছাড়া নার্ভাসনেসের কারণে হওয়া ভুলগুলো তখন দর্শকদের চোখে কম পড়বে।

৫. একজনকে বেছে নিন

সবাই আপনার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আপনি ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না। এমন মুহূর্তে শ্রোতা কিংবা দর্শকদের মাঝ থেকে একজনকে বেছে নিন। তার সাথে কথা বলুন। তাকে প্রশ্ন করুন। মনে করুন আপনারা দু’জনই কথা বলছেন।

৬. নিজের ব্যক্তিগত ভাবনার কথা বলুন

আলোচনা শুধু তাত্ত্বিক কিংবা অন্যের কথা দিয়েই করবেন না। এক্ষেত্রে নিজের ভাবনাটাকেও উপস্থাপন করুন। এতে শ্রোতা ও দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হবে।

অনেক মানুষের সামনে বক্তৃতা দিতে হলে নিজেকে প্রস্তুত করুন। বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পেলেই তা গ্রহণ করুন। একা একা অনুশীলন করুন। ধীরে ধীরে আপনিই হয়ে উঠবেন সফল বক্তা। কারণ সব সফল বক্তাদেরই প্রথম বক্তৃতার সময় ঘর্মাক্ত হতে হয়েছে!

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top