বসের খারাপ ব্যবহার সামলাবেন যেভাবে

Angry-boss-artআরিফুল ইসলাম

অনেক চাকরিজীবী অফিসের বসের ব্যাপারে বিরক্ত। বসের কঠোর ব্যবহারে অতিষ্ট থাকেন অনেকেই। সম্ভবত আপনি নিজেও এই মুহূর্তে এমন পরিস্থিতির মধ্যে আছেন। খুঁতখুঁতে মেজাজের বসের অধীনে চাকরি আপনাকে প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে ফেলে দিতে পারে।

হতে পারে আপনার পরিশ্রমের অর্জনটা বস নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন। আপনার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করছে। বুঝতে পারছেন না আপনার কি করা উচিৎ। অথবা, এ মুহূর্তে চাকরিটা ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবছেন। মনে রাখবেন বসদের অত্যাচারে অতিষ্ট অনেকের মধ্যে আপনি একজন।

বসদের খারাপ ব্যবহারের অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে- তারা বুঝতেই পারেন না যে, তারা খারাপ ব্যাবহার করছেন। কর্মচারীরা অধিকাংশ সময় চাকরি হারানোর ভয়ে বসদের বিরুদ্ধে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেন না।

কঠোর বসের সঠিক অর্থ কর্মক্ষেত্র ভেদে ভিন্ন হতে পারে। কিছুকিছু বস কর্মচারীদের কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ। যার কারণে কর্মচারীরা তাকে ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারেন না।

অনেক সময় কর্মকর্তারা কর্মচারীদের কাজ শেখাতে কঠোর হতে পারেন যা মূলত কর্মচারীদের জন্যই মঙ্গলজনক। কিন্তু কর্মচারীরা ব্যাপারটিকে সহজভাবে না নিয়ে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার হিসেবে ধরে নেয়। এটা মূলত ভুল বুঝাবুঝি। এক্ষেত্রে আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনার বস কখনো ভুলের উর্ধ্বে নন। তিনি হয়তোবা এভাবে না বললেও পারতেন। মানুষ হিসেবে তার ভুল হতেই পারে।

এমনটিও হতে পারে যে, ওই কর্মকর্তার নেতৃত্ব দেয়ার মতো পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। অথবা তাদের উর্ধ্বতনদের খারাপ আচরণ থেকেও এটা হতে পারে। যে কারণে কর্মকর্তা নিজেই মানসিক চাপে থাকেন এবং কর্মচারীদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে পারেননা।

কঠোর মেজাজের বসদের নিয়ে সবচেয়ে বড় ঝামেলা হলো তাদের সাথে কিছু শেয়ার করা যায় না। আপনি আপনার কর্মক্ষেত্রে যে ধরনের পরিবেশ কামনা করছেন আপনার বস হয়তোবা সেটি চাচ্ছেন না। বস ও কর্মচারীদের মাঝে আরেকটি বড় সমস্যা আদর্শিক দ্বন্দ্ব। কোম্পানিতে আপনার অবশ্যই একটি ভূমিকা রয়েছে কিন্তু বসের কাজ আপনাকে পরিচালনা করা। সুতরাং বসের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আপনি যদি মনে করেন বস পাল্টানো দরকার তাহলে আপনি অন্য কোনো চাকরি খুঁজুন বা শুরু করুন কোনো ব্যবসা।

বসের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করার সবচেয়ে কার্যকরি উপায় তাদের সাথে খোলাখুলি আলাপ আলোচনা করা। আপনি কী চাচ্ছেন তা বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে বলুন। তারা আপনার মতামতের খুব বেশি মুল্যায়ন না করলেও আপনার কিছু চাহিদা পূরণ করতে পারেন।

একজন বসের প্রধান কাজ হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে ভালো একটি পরিবেশ তৈরি করা। সে যদি এটা করতে ব্যর্থ হয় তবে তা কোম্পানির জন্য দীর্ঘ মেয়াদী কুফল বয়ে আনবে। বসকে তার ব্যর্থতার জন্য ধিক্কার জানালে পরিবেশ আরো ঘোলাটে হতে পারে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো বুদ্ধি হলো বসের সাথে পরিবেশ পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারে পরামর্শ দেয়া। এ ব্যাপারে বস কথা বলতে রাজি না হলে আপনি আরও উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করতে পারেন। কর্মচারীদের বড় একটি অংশ বসের ব্যাপারে তাদের কাছে অভিযোগ করলে ওপর মহল থেকে অবশ্যই ব্যাপারটি তদারকি করবেন।

এতেও কাজ না হলে আপনি কাজের পরিধি পরিবর্তন করে দেখতে পারেন। যা আপনার  আগের সমস্যার সমাধান করতে পারে। আর সেখানে যদি অন্য কোনো ডিপার্টমেন্ট না থাকে তাহলে চাকরি পরিবর্তন করাই সবচেয়ে নিরাপদ।

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে- “Boss is always right”। সুতরাং বসকে কখনো বলা যাবেনা আপনি ভুল বলছেন বা ভুল করছেন। বলতে হবে স্যার কাজটি এভাবেও হতে পারত। বা অন্যভাবে করলে কাজটিতে আমরা সফল হতাম।

ছোট খাটো কোনো ঝামেলাকে বড় করে না দেখে বা বড় করার সময় না দিয়ে শুরুতেই সমাধানের চেষ্টা করুন। বস যত কঠোরই হোক না কেন তিনি মানুষ। সুতরাং তাকে ভয় নয় বরং আপনি আপনার দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করতে থাকুন। কোনো না কোনো সময় তিনি তার ভুল বুঝতে পারবেন।

ক্যারিয়ার, ট্রেনিং ও স্কলারশিপ সম্পর্কে
exclusive তথ্য পেতে ফেসবুক গ্রুপে
জয়েন করুন-

Career Intelligence | My Career Partner

Scroll to Top